দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ বেনিয়াদের অত্যাচার, নিপিড়ন ও নির্যাতনের স্মৃতি চিহ্ন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামুন্দি কাচারী বাড়ি ধ্বংস হতে চলেছে। সংস্কারের অভাবে একদিকে যেমন কাচারী বাড়িটির সৌন্ধর্য হানী ঘটেছে তেমনি অন্যদিকে মাদকাসক্ত ও চোরেরা গুপ্ত ধনের আশায় বাড়ির মেঝে খুড়ে নিয়ে গেছে মূল্যবান মার্বেল পাথর ও ইট। অপর দিকে প্রভাবশালীরা বেশ কিছু সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। সংরক্ষণ ও সংস্কার করলে এটিও হতে পারে পর্যটক কেন্দ্র।
যতদুর জানা যায়, দেশ বিভাগের আগে কুখ্যাত নীলকর জেম্স হীলের পতনের পর কলকাতার বিখ্যাত জমিদার বটকৃষ্ণ রায় চৌধুরী অত্র এলাকার ইজারা গ্রহণ করেন। চলতে থাকে তার জমিদারী কার্যক্রম। এসকল কার্যক্রমের জন্য বামন্দী কাচারী বাড়ীটিকে বেছে নেয় জমিদার বটকৃষ্ণ রায় চৌধুরী।
এখানে রয়েছে সুরক্ষিত শয়ণ কক্ষ, নাচ ঘর, কয়েদখানা এবং উঠানে রয়েছে মৃত্যুকুপ। প্রচলিত আছে জমিদারের খাজনা বা কর দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কিংবা খাজনা দিতে দেরী হলে চাষীদেরকে নির্মম নির্যাতন শেষে মৃত্যুকুপে নিক্ষেপ করা হতো। জমিদারের নায়েব গোমসত্মাদের কু-দৃষ্টি থেকে রেহায় পায়নি এলাকার সুন্দরী রমনীরাও। তাদের কে ধরে এনে আমোদ-প্রমোদ শেষে হত্যা করা হতো। আবার অনেক রমনীকে বাইজি বা রক্ষীতা হিসেবে রাখা হতো। কেউ যদি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো তাহলে তাকেও হত্যা করে মৃত্যু কুপে নিক্ষেপ করা হতো। কাচারী বাড়ির মূল ফটকের পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে ঘোড়ার ঘর।
পরবর্তীতে জমিদার বটকৃঞ্চ রায় চৌধুরীর কাছ থেকে ক্রয় সুত্রে জমিদারীর মালিক হন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার খেমেরদিয়াড়ের বিনোদ বিহারী বাবু । দেশ স্বাধীন পর্যন্ত তারা জমিদারী পরিচালনা করেন। দেশ বিভাগের আগ থেকেই কাচারী বাড়িটির দু’টি কক্ষে কাচারী কার্যক্রম পরিচালিত হতো। সে নিয়মেই স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই বামুন্দি ইউপি ভূমি অফিসের কার্যক্রম চলছে ওই কাচারী বাড়িতে।
বামুন্দি ইউপি ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বজলুর রশিদ জানান, কাচারী বাড়ির আওতায় ১৬ একর জমিতে ৩.১৫ একর আমবাগান, ধানী জমি ০.৮৪ একর, পুকুর ২.২১ একর, বাড়ি ০.৫৩ একর ও ০.৩০ একর জমিতে তহশিল অফিস অবস্থিত। আমবাগান ও আমবাগান সংলগ্ন কিছু জমিতে রাজস্ব বিভাগ ইজারা প্রদান করেছে। হাটের পার্শ্বে ১ একর ৩০ শতক জমি স্থানীয় প্রভাবশালীরা দবর দখল করে নিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকেই গুপ্তধনের সন্ধানে কাচারী বাড়ির বিভিন্ন স্থানে ভাংচুর করা হয়। সংস্কার আর সংরক্ষণের অভাবে বাড়িটির স্থাপনাগুলো দিন দিন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রভাব শালীদের ইন্ধনে মাদকাসক্তরা ভবনের ইট কাঠ খুলে নিয়ে যায়। ইতিহাস ঐহিত্য সমৃদ্ধ কাচারী বাড়িটি দেখতে দুর দুরান্ত থেকে এখনও অনেক পর্যটক আসেন। স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগন আসেন শিক্ষা সফরে। আবার বিশেষ দিনগুলোতে অনেকেই এখানে আসেন সময় কাটাতে । এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি ইতিহাসের সাক্ষী কাচারী বাড়িটি সংস্কার আর সংরক্ষণ করে এখানেও পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা করা হোক।
This post was last modified on ডিসেম্বর ১৯, ২০১৪ 5:47 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ১ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক অফিসেই এসির ব্যবস্থা থাকে না। এসি না থাকলেও কাজ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুরো বিশ্বের জলবায়ুর সঙ্গে তুলনা করলে প্রথমেই উঠে আসে এশিয়ার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয়তার শিখরে আছেন অভিনেত্রী জয়া। দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ক্যাম্পাস বিক্ষোভের…