দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সোমবার ঢাকার কারওয়ান বাজারের বেসিস মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে মোবাইল গেমশিল্পের উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভায় বাংলাদেশের মোবাইল গেইমশিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা মিলিত হন। উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে মোবাইল গেইম এবং এর শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন গেম তৈরির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ছাড়াও শতাধিক গেম নির্মাতা। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্মার্টফোনের গেম নির্মাতা প্যাঁচাস গেম স্টুডিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মায়াজ এম রহমান। এছাড়াও সভায় নিজেদের নিজ নিজ বক্তব্য উপস্থাপন করেন টিম ক্রিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী রাসেল টি আহমেদ, এ আর কম্যুনিকেশানের প্রধান নির্বাহী এম আসিফ রহমান, ম্যাসিভস্টার স্টুডিওর এস এম মাহবুব আলম, এমসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাক আশ্রাফ আবির, ভক্সলিভ গেমসের প্রতিষ্ঠাতা মো. আদনান ইসলাম, ১৪৩ প্লে গেমসের প্রতিষ্ঠাতা এম এম হাসান, স্পিনঅফ স্টুডিওর আসাদুজ্জামান, কাডরোল্যাবসের বিপণন বিভাগের ইফতেখার রাসেল, মোবিঅ্যাপের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা আরিফিন, সফটউইন্ডটেকের মইনুর হোসেন, আইটিআইডব্লিউয়ের তানভীর আহমেদ এবং গুগলের কান্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্ট খান মো. আনোয়ারুস সালাম, মনোজ প্রভাকর শাহ্।
প্যাঁচাস গেম স্টুডিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মায়াজ এম রহমান দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মোবাইল গেমের সম্ভাবনা উল্লেখ্য করে বলেন, বর্তমানে বিশ্বে ১২০ কোটির বেশি মানুষ গেমে সক্রিয়। ২০১৪ সালে ভিডিও গেমের বাজার ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে মোবাইল গেম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯৬ কোটি ৬০ লাখ। মোবাইলে যত অ্যাপস নামানো হয়, তার ৭০ শতাংশই গেম। ৫৩ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন গেম খেলেন।
মায়াজ এম রহমান আরো বলেন, বাংলাদেশের গেম শিল্প সম্ভাবনা উজ্জ্বল, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ডেভেলপারদের গেম তৈরির অসংখ্য নজির রয়েছে, এ দেশে মোবাইল গেম নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশে গেম তৈরির সফলতার ইতিহাসও রয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত মোবাইল গেমশিল্প দাঁড়ায়নি। বাংলাদেশি গেম নির্মাতাদের তৈরি গেমের ডেটাবেজ তৈরি করা প্রয়োজন।
পরে অনুষ্ঠানে গেমশিল্প তৈরি প্রসঙ্গে দেড় ঘণ্টার প্রশ্নোত্তর পর্ব ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় নির্মাতা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ একে অপরের সাথে গেম তৈরি এবং এর নানান বিষয়ে এবং গেমের বাজার ও শিল্প হিসেবে গড়ে উঠতে সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। এখানে দেশের উদ্যোক্তাদের সাফল্য এবং ব্যর্থতার বিষয়ে আলোচনা হয় এবং কিভাবে আরো উন্নতির দিকে দেশের এই সম্ভাবনাময় শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেই বিষয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই মনে করেন, বাংলাদেশে গেমের বাজার তৈরি হচ্ছে। এখানে বড় গেমশিল্প গড়ে উঠতে হতে পারে। এখন সঠিক দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, গেম তৈরি ও ব্যবসার সঙ্গে অর্থ লেনদেনের বিষয়টিও যুক্ত থাকে। এ ক্ষেত্রে অনলাইন লেনদেনের জন্য গেটওয়ে প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয়, অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে নিয়ে গুগলের কোনো সমস্যা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিলে অ্যাপ কেনাবেচার ক্ষেত্রে সমস্যা দূর হতে পারে।
বর্তমানে দেশের অর্ধেকের বেশি নাগরিক তরুন ফলে দেশের বাইরে ছাড়াও আমাদের নিজ দেশেও গেমিং শিল্প এবং মোবাইল গেমিং এর বাজার সৃষ্টি হওয়ার স্বাভাবিক বিষয়। এই খাতে সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং প্রতিভাবান ডেভেলপারদের সঠিক দিক নির্দেশনা সহ কারিগরি এবং প্রযুক্তিগত সুবিধা দিলে অচিরেই আন্তর্জাতিক বাজার এবং দেশীও বাজারে বাংলাদেশীদের তৈরি গেম রাজত্ব করবে এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
এবার চলুন জেনে নেয়া যাক দেশের মোবাইল গেমশিল্পের প্রসারে যারা যারা কাজ করে যাচ্ছে-
Bangladesh Association of Software and Information Services সংক্ষেপে BASIS হচ্ছে বাংলাদেশ সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এবং ডেভেলপারদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ১৯৯৭ সাল থেকে এটি যাত্রা শুরু করে এখনো সফল ভাবে নিজেদের কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশের প্রযুক্তি খাতে অবদান রেখে যাচ্ছে। যাত্রা করার সময় বেসিস মাত্র ১৭ সদস্য নিয়ে যাত্রা করলেও বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে।
-হচ্ছে মোবাইল গেম এবং সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তারা নিজেদের ডেভেলপার দিয়ে অ্যাপ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নির্মাতাদের অ্যাপ বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে বিপনন এবং বিক্রয়ের ব্যবস্থা করে থাকে।
– সংক্ষেপে মো-মো। মোমো হচ্ছে অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান, এরা মোবাইল ইন্ড্রাস্ট্রির সকল আগ্রহীদের জন্য ফ্রি কাজ করে থাকে। তাদের মূল কাজ হচ্ছে ক্রস বর্ডার মার্কেটিং এবং আন্তর্জাতিক এবং দেশি উদ্যোগের সমন্বয় করা একই সাথে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নানান বিষয়ে দেশি ডেভেলপারদের ধারণা প্রদান।
– এরা হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন গুগোল ডেভেলপার গ্রুপ। GDG Sonargaon প্রফেসনাল ডেভেলপারদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এদের মূল কাজ হচ্ছে স্থানীয় পর্যায় থেকে Android অ্যাপ্লিকেশান ডেভেলপ করে যাওয়া।
এছাড়াও এর বাইরেও অনেক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগ রয়েছে আজকের দেশের মোবাইল গেমশিল্প কে এগিয়ে নেয়ার নেপথ্য। বাংলাদেশের স্মার্টফোনে গেম তৈরি শিল্প বেশীদিনের নয়, বিগত ৩ থেকে ৪ বছর উপরের প্রায় সকল কোম্পানি নিজ নিজ উদ্যোগে এই শিল্প এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সবাই মিলে এক সাথে কাজ করলে এবং সরকারের এই শিল্প নিয়ে বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে বাংলাদেশে খুব তাড়াতাড়ি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গেম শিল্প দিয়েই মাথা উচু করে দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
This post was last modified on আগস্ট ১৭, ২০১৪ 9:50 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…