সুইডেনে বর্জ্য থেকে তৈরি করা হচ্ছে বিদ্যুৎ

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ সুইডেন বর্তমানে বর্জ্য রিসাইকেলে বেশ এগিয়ে গিয়েছে। দেশটির তথ্যমতে তারা দেশের মোট বর্জ্যের প্রায় শতকরা ৯৯ শতাংশকে রিসাইকেল করে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে পারছে। ইউরোপের অনেক দেশেই বর্তমানে বর্জ্য রিসাইকেল এনার্জির দিকে নজর দিচ্ছে।


সুইডেন তার দেশের জনসাধারণকে যতটা সম্ভব কম বর্জ্য তৈরিতে নজর দিতে অনুপ্রানিত করছে। প্রতিবছর তাদের দেশে প্রায় ৪৬১ কিলোগ্রাম বর্জ্য তৈরি হয়, যা ইউরোপের মোট বর্জ্যের অর্ধেকের তুলনায় কিছুটা কম। এই বর্জ্যগুলো পুনরায় ব্যবহার করার জন্য দেশটি বর্তমানে বর্জ্য ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। এই প্রজেক্টের নাম waste-to-energy বা WTE প্রোগ্রাম। সুইডেন প্রতিবছর প্রায় ২ মিলিয়ন টন বর্জ্যকে পুড়িয়ে পুনরায় ব্যবহার করে। এর মানে হলো এই যে, ২ মিলিয়ন টন বর্জ্য থেকে ৬৭০০০ হাজার ওয়েল এনার্জির সমকক্ষ শক্তি পাওয়া সম্ভব। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ৩২টি ডব্লিউটিই প্ল্যান্ট রয়েছে। যেখানে বর্জ্যগুলো থেকে স্টিম তৈরি করে তার মাধ্যমে জেনারেটর টার্বাইনকে ঘুরানো হয় এবং ইলেক্ট্রিসিটি তৈরি করা হয়।

সুইডেনে বর্জ্য থেকে উৎপাদিত এই বিদ্যুৎকে প্রায় ১ মিলিয়ন বাড়িতে তাপের জন্য সরবরাহ করা হয় এবং ২৬০০০০ বাড়িতে বিদ্যুৎ হিসেবে প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়া এই বর্জ্যের অপদ্রব্য থেকে পোর্ক্লেইন বা সিরামিক শিল্পে, অ্যাসবেসটস বোর্ড তৈরি, টাইল এবং রাস্তাসহ অন্যান্য নির্মাণ শিল্পে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর বাইরেও এই বর্জ্যগুলোর পোড়ানোর পর একটা অংশ প্রাকৃতিক সার হিসেবে জমিতে প্রদান করা হয় যা কৃষি জমিগুলোর উৎপাদনকে আরো বৃদ্ধি করে। কিন্তু আপনার মনে এই প্রশ্ন আসতে পারে যে, এই বর্জ্যগুলো পোড়ানোর পর কার্বন ডাই অক্সাইড এবং কার্বন মনোঅক্সাইড তৈরি হওয়ার কথা। তা পরিবেশের জন্য বেশ হুমকি। হ্যাঁ আপনার কথাটা ঠিক, কিন্তু সুইডেন এইক্ষেত্রেও অনন্য সাক্ষর রেখেছে। সুইডেনের ডব্লিউটিই প্রজেক্টগুলোর কার্বন ডাই অক্সাইডকে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাসায়নিক উপকরণ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব পড়া থেকে রক্ষা করে থাকে।

সুইডেন তাদের বর্জ্য থেকে প্রাপ্ত সকল উপাদানকেই কোন না কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবার ব্যবহার উপযোগী করে তুলছে। সুইডেন তাদের এই ডব্লিউটিই প্রজেক্টের স্লোগান নির্ধারন করেছে zero waste। এটি সত্যিই একটি শুন্য বর্জ্য প্রকল্প কেননা তারা এই বর্জ্যগুলো এমন কোন অংশ নেই যা ব্যবহার উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করছে না। এটি সত্যি উন্নত অনেক দেশের জন্য এমনকি আমাদের দেশের জন্য একটি প্রয়োজনীয় দিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

Related Post

তথ্যসূত্রঃ টেকজার্নাল

This post was last modified on জুন ১৪, ২০২২ 11:29 পূর্বাহ্ন

K. A. B Tohin

Recent Posts

গাজা এবং লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৪৫

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড এবং লেবাননজুড়ে ভয়াবহ হামলা চলমান রেখেছে…

% দিন আগে

এখন থেকে বড় পর্দায় দেখা যাবে রাতের স্বপ্ন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…

% দিন আগে

রাজবাড়ী বড় মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে