দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের সমাজে বেশীরভাগ সামাজিক জটিলতা দেখা দেয় স্বামী স্ত্রীর ভরণ-পোষণ সম্পর্কিত বিষয়ে। সব ধর্মের পারিবারিক আইনে দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়ে থাকে এই ভরণ-পোষণ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান কল্পে। আজ আমরা জানার চেষ্টা করবো একজন স্ত্রী কোন কোন ক্ষেত্রে স্বামীর প্রতি ভরণ পোষণের দাবিদার এবং কখন তিনি ভরণ-পোষণের অধিকার হারাবেন।
কোনও আইনে স্বামীর প্রতি স্ত্রী কি পরিমাণ ভরণ পোষণ পাবেন তা সঠিক ভাবে নির্ধারণ করে দেয়া না থাকলেও আইনে বলা আছে একজন স্ত্রী স্বামীর কাছে স্বামী-স্ত্রী দুই জনের সামাজিক অবস্থান অর্থাৎ নিজেদের আরথিক এবং সামজিক সম্মানের উপর নির্ভর করে ভরণ পোষণ পাবেন। এক্ষেত্রে একজন স্বামীর প্রতি স্ত্রী সেই পর্যায়ের ভরণ পোষণ দাবি করতে পারবেন যা তার স্বামী কিংবা তার সামাজিক অবস্থান।
জেনে নিন মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন কিভাবে হয়!
যদি কোন স্বামী আর্থিক ভাবে দুর্বল হন এবং তার স্ত্রী আদালতে স্বামীর প্রতি ন্যায্য ভরণ-পোষণ দাবি করছে। সে ক্ষেত্রে আদালত ভরণ-পোষণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রীর সামাজিক অবস্থান এবং আর্থিক অবস্থান পর্যালোচনা করবেন।
এছাড়াও বেশ কিছু ক্ষেত্রে একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছে ভরণ-পোষণ এর অধিকার হারাতে পারেন, যেমন যদি কোনো স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি ধর্মীয় দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালন না করে তবে তিনি তাৎক্ষনিক স্বামীর কাছে ভরণ-পোষণ এর দাবি হারাবেন।
স্ত্রী যদি ব্যাভিচারী হন তবে স্বামী ওই স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ দিতে বাধ্য নন।
কোনো স্বামীর মৃতকালে তার অবর্তমানে ইদ্দত পালনকালে বিধবা ভরণ-পোষণ পাবেন না।
এছারা অনেক ক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর সাথে না থাকলেও স্বামীকে ভরণ-পোষণ দিতে হয়, যেমন যদি কোন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা থাকেন এবং সেক্ষেত্রে স্বামীকে অবশ্যই সন্তান প্রসবের আগ পর্যন্ত ভরণ-পোষণ দিতে হবে। স্বামী যদি অভ্যাসগতভাবে খারাপ চরিত্রের হন, স্বামী যদি স্ত্রী তালাক না দিলেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন, স্বামী যদি স্ত্রী থেকে দূরে থাকেন তবে তাকে স্ত্রীর ভরণ-পোষণ পরিশোধ করতে হবে।
আপনি কি জানেন- বেদখল হয়ে যাওয়া জমির দখল ফিরে পেতে করণীয় কি?
স্বামীর বেঁচে থাকতে ভরণপোষণ পাওয়া একজন স্ত্রীর ধর্মীয় এবং আইনগত অধিকার। স্বামী এ অধিকার প্রদান না করলে তা দেওয়ানি ও ফৌদজারি অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। কোনো স্ত্রী যদি তার ভরণপোষণ না পায় তবে তিনি ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী মামলা করতে পারে এবং আদালত তাকে নির্ধারিত হারে ভরণ- পোষণ আদায় করে দিবেন।