দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভাষাগত পার্থক্য কি মানুষের আর্থিক সঞ্চয়ে তারতম্য ঘটায় ভাষা কি ধূমপান বা শারীরিক কর্মতর্যাপরতায়ও হেরফের ঘটাতে পারে বিষয়টির ব্যবহারিক বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কিন্তু বিশিষ্ট কোনো অর্থনীতিবিদ ও গবেষক যদি এমন তত্ত্ব দেন, তাহলে কেমন লাগবে? এমনই একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন এডিশনে।
খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণ-সম্বন্ধীয় অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অধ্যাপক কেইথ চেন তাঁর এক গবেষণাপত্রে দাবি করেছেন, ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষ চীনের মান্দারিন, নাইজেরিয়ার ইউরোবা বা মালয়েশিয়ার মালয়ের মতো ভাষাভাষীর চেয়ে শেষ বয়সে বেশি আর্থিক সংকটে পড়বেন। তাঁর দাবি, ইংরেজি ভাষাভাষী লোকজন অন্য ভাষাভাষীদের তুলনায় কম সঞ্চয় করেন, বেশি ধূমপান ও কম শরীরচর্চা করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি ইংরেজি বাক্যের গঠনকে শনাক্ত করেছেন। বিশেষ করে ইংরেজি বাক্যের ক্রিয়ার কাল মানুষের অর্থনৈতিক, মানসিক ও শারীরিক বিষয়ে প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন তিনি।
গবেষণার স্বার্থে চেন বিশ্বের সব ভাষাকে কাল বা সময় নির্ধারণের বিচারে দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। প্রথমটি হচ্ছে, যেসব ভাষার ব্যাকরণে ভবিষ্যর্যা কালে জোরালো নির্দেশক (স্ট্রং এফটিআর) থাকে; এসব ভাষাভাষী মানুষকে ভবিষ্যর্যা নিয়ে কথা বলতে পৃথক ক্রিয়ার কাল ব্যবহার করতে হয়। অপরটি হচ্ছে, যেসব ভাষার ব্যাকরণে ভবিষ্যর্যা সময়ের দুর্বল নির্দেশক (উইক এফটিআর) থাকে; এসব ভাষাভাষী মানুষকে ভবিষ্যর্যা নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে ক্রিয়ার বর্তমান কাল ব্যবহার করলেও চলে।
গবেষক চেন উদাহরণ দেন, যদি কাওকে কোনো ইংরেজি ভাষাভাষী সহকর্মীকে ব্যাখ্যা দিতে হয় কেন তিনি আজ বিকেলের বৈঠকে থাকবেন না, তাহলে তিনি এটা বলতে পারবেন না, ‘আই গো টু আ সেমিনার।’ তাঁকে বলতে হবে, ‘আই উইল গো/এম গোয়িং/হ্যাভ টু গো টু আ সেমিনার।’ মান্দারিন, জার্মান বা এ-জাতীয় ভাষাগুলোতে ভবিষ্যর্যা নির্দেশক শব্দগুলো বাদ দিয়েও ভবিষ্যর্যাকে বোঝানো যায়।
‘আগামীকাল বৃষ্টি হবে’-এই বাক্যটি ইংরেজিতে বলতে গেলে বলতে হবে, ‘ইট উইল রেইন টুমরো।’ কিন্তু জার্মান ভাষায় ভবিষ্যর্যা নির্দেশ করার জন্য ‘উইল’ বা এর সমার্থক শব্দ ব্যবহার না করে ‘মরগেন রেগনেট এস (ইট রেইনস টুমরো)’ লিখলেই চলে।
কিন্তু এর সঙ্গে আর্থিক সঞ্চয়ের যোগসূত্র কোথায় চেনের যুক্তি, ইংরেজি ভাষার ভবিষ্যর্যা কাল-সম্বন্ধীয় বাক্য বলতে গেলে ব্যাকরণগত কারণে বর্তমানকে ভবিষ্যর্যা থেকে পৃথক করতে হয়। এতে কথা বলার সময় ভবিষ্যর্যাকে ইংরেজিভাষীরা অবচেতনেই বর্তমান থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। যেহেতু অবচেতনে তিনি ভবিষ্যর্যাকে বর্তমানের মতো ঘনিষ্ঠতায় উপলব্ধি করতে পারেন না, সেহেতু ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করাও তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
অধ্যাপক চেন প্রকৃত ভবিষ্যর্যা কাল নির্দেশক শব্দসমৃদ্ধ ভাষাভাষী ব্যক্তিদের চেয়ে অন্যরা বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করবে বলে দাবি করেছেন। সেগুলো হলো, তারা অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ে ভবিষ্যর্যা কাল নির্দেশক শব্দসমৃদ্ধ ভাষাভাষী ব্যক্তিদের চেয়ে ৩৯ ভাগ আর প্রতিবছরের হিসেবে ৩১ ভাগ বেশি সঞ্চয় করতে পারবে, ২৪ ভাগ কম ধূমপায়ী হবে, ২৯ ভাগ বেশি শারীরিকভাবে কর্মতর্যাপর হবে এবং স্থূলতার আশঙ্কা ১৩ ভাগ কমে যাবে।
তবে চেনের এই অনুসন্ধানের কড়া সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদ ও ভাষাতত্ত্ববিদেরা। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ মর্টেন লাও এবং যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ববিদ জন ম্যাকহর্টার। তাঁদের মতে, এটা একটা ‘প্রলুব্ধকর ধারণা’ মাত্র, যার কোনো মানেই হয় না। বিবিসি।
This post was last modified on জুন ২২, ২০১৬ 11:51 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ স্বাদে মিষ্টি না হলেও এই ধরনের খাবারে শর্করার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেমেন্ট প্রযুক্তিতে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অন্তর্ভূক্তিমূলক থিয়েটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলীকে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার…