দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে আজ ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু সেই পরীক্ষার ভবিষ্যত কি তা নিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। কারণ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এতোটাই শোচনীয় যে, হরতাল-ধর্মঘটে কবেকার পরীক্ষা কবে হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
সূচি অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা এবং বেলা ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কখন কোন পরীক্ষা স্থগিত হবে তার কোনই নিশ্চয়তা এখনও পাওয়া যায়নি। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়েছে পরীক্ষা গ্রহণে প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা জানানো হয়নি। আর এই অবস্থায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আছেন চরম উৎকণ্ঠায়।
১০ লাখ ১২ হাজার ৫৮১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে
এবছর আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এইচএসসি, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ভোকেশনাল/বিএম (বিজনেজ ম্যানেজমেন্ট) ও ডিআইবিএসে মোট ১০ লাখ ১২ হাজার ৫৮১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। এর মধ্যে এইচএসসিতে ৮ লাখ ২৩ হাজার ২৪১ জন, আলিমে ৮৮ হাজার ৭৭৯ জন, এইচএসসি বিএম/ভোকেশনালে ৯৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং ডিআইবিএসে ৪ হাজার ৬০৫ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬২ জন ছাত্র এবং ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৯১৯ জন ছাত্রী।
২০১২ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৯ লাখ ২৬ হাজার ৮১৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলো। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৮৫ হাজার ৭৬৭ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে।
এবছর ২ হাজার ২৮৮ কেন্দ্রে ৭ হাজার ৮০৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে। গতবারের চেয়ে এবার ২৪৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৯২টি পরীক্ষা কেন্দ্র বেড়েছে। দেশের বাইরে বিদেশের পাঁচটি কেন্দ্রে ১৬৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। ১ এপ্রিল থেকে ২৮ মে পর্যন্ত তত্ত্বীয় এবং ১ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। (তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ নিউজ২৪.কম)
আন্ত:শিক্ষাবোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসলিমা বেগম রোববার ৩১ মার্চ রাতে বলেন, “পরীক্ষা গ্রহণের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।” পরীক্ষার দিনে যদি হরতাল পড়ে সেক্ষেত্রে এসএসসি পরীক্ষার মতো শুক্র ও শনিবার পরীক্ষা নেওয়া হবে জানিয়ে অধ্যাপক তাসলিমা বেগম নির্বিঘ্েন পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য সবার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
গত বছর বাংলা প্রথম পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবার রসায়ন প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, পৌরনীতি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে।
এবারও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী, বুদ্ধি ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীরা এবারও অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
তবে পরীক্ষার সময়ে বিরোধী দলীয় জোটের হরতালের আভাসে উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষা পরিবার।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী লাখ লাখ পরীক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে পরীক্ষার সময় হরতাল না দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গতমাসে এস.এস.সি পরীক্ষা যথারিতি শুরু হলেও পরে হরতালের কারণে বেশ কিছু পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা এই অনিশ্চয়তার কারণে চরম বিপাকে পড়েছে এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থীরা।