দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ র্যাবের গুলিতে আহত হয়ে এক পা হারানো কলেজ ছাত্র লিমন হোসেন এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। লিমন পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার কাঁঠালিয়া পিজিএস বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কারিগরি কলেজের ছাত্র।
২০১১ সালে সহপাঠীরা যখন কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবসহাপনায় পরীক্ষা দিয়েছে, লিমন তখন পা হারিয়ে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের বিছানায় পড়ে ছিল। আর এভাবেই চিকিৎসা-যন্ত্রণায় কেটে গেছে পঙ্গু লিমনের এক বছর। তবু হাল ছাড়েনি দরিদ্র পরিবারের ছেলে লিমন। চিকিৎসা শেষে আবার মন দেয় লেখাপড়ায়। গত বছর প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সে পাস করে। গতকাল সোমবার তার দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
তার পারিবারিক সূত্র জানায়, দেড় বছর ধরে কাউখালির ভাড়া করা বাসা থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে লিমন। সেখান থেকেই কৃত্রিম পায়ে হেঁটে গিয়ে কাউখালির সরকারি কেজি ইউনিয়ন বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথম দিনের বাংলা পরীক্ষায় অংশ নেয় ।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু রাজাপুরের সাতুরিয়া গ্রামে বাড়ির কাছে গরু চরাতে গিয়ে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ র্যাবের গুলিতে পা হারায় কাউখালীর কলেজছাত্র লিমন হোসেন। সে কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি লিমন হোসেন। গত বছর ২০১২ সালের ১ এপ্রিল কারিগারি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসি (বিএম) শাখা থেকে প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ছিল।
লিমনের ভাই হেমায়েত হোসেন সুমন জানান, লিমনের পরীক্ষা ভালো হচ্ছে। বাকি পরীক্ষাগুলো যাতে ভাল হয়, সেজন্য লিমনের জন্য দোয়া চেয়েছেন তিনি।
পরীক্ষা শুরুর আগের দিন লিমন সাংবাদিকদের বলেন, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ র্যাব আমাকে গুলি করে ফেলে রাখে। আমি তখন মরার মতো পড়ে ছিলাম। মনে হয়েছিল বাঁচব না। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও র্যাবের নির্মমতায় আমার শিক্ষাজীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেছে। মা-বাবা, শিক্ষক, সহপাঠীসহ অসংখ্য মানুষের দোয়া আর ভালোবাসায় এইচএসসি প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় পাস করার পর এবার দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছি।