আশ্চর্য এক গ্রাম: দিন-রাত দরজা খোলা থাকে প্রতিটি ঘরের!

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ অনেক ধরনের গ্রাম দেখা গেছে। কিন্তু এমন এক আশ্চর্য গ্রামের খবর পাওয়া গেছে যে গ্রামে দিন-রাত দরজা খোলা থাকে প্রতিটি ঘরের।

এমন এক আশ্চর্য গ্রাম যেখানে কোন বাড়ির ঘরের দরজা রয়েছে তবে কবাট নেই। অর্থাৎ কোনো ধরেই দরজা লাগানো থাকে না। যে কেও এমন কথা শুনলে আশ্চর্যই হবেন। তবে ঘটনাটি সত্য। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এসেছে এমন একটি খবর। ঘটনাটি ভারতের। সেখারে ঘরের দরজা আছে বটে, কবাট নেই। এক্কেবারে উদোম অবস্থা। তাই বলে ভাবতেন না যে সেখানে চোর গিয়ে হানা দেবে। কখনও নয়, কারণ ওই গ্রামের সবাই এরকমভাবে ঘরের দরজা খোলা রাখেন। কেনো এমন কাজ করেন তারও একটা উত্তর মিলেছে। আর সেটি হলো, শনি দেবীর কোপানলে পড়তে হবে- এমন আশংকা রয়েছে সেখানকার মানুষদের মধ্যে। আর তাই তারা দরজা সব সময় খোলা রাখেন। এমন এক বিশ্বাস এবং ভরসা থেকেই ভারতের ওই গ্রামের কোনো বাড়িতে দরজায় কবাট নেই।

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, সেখানকার ব্যাংকের দরজায়ও তালা নেই। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় শনি শিংনাপুর নামক গ্রামে এমন অরক্ষিতভাবে থাকে প্রতিটি বাড়ি।

Related Post

সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দরজা উদোম ঘরেই এলাকাবাসী নিশ্চিন্তে টাকাপয়সা, গয়নাগাঁটি রেখে বাইরে কাজে যান। আবার থাকেনও নির্ভাবনায়। বহু যুগ যুগ ধরে বংশপরম্পরা চলে আসছে ঠিক এভাবেই।

এএফপির খবরের উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ঘরে দরজার কবাট না থাকার কারণ জানতে চাইলে জয়শ্রী গাড়ে নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘বহু বছর আগে শনি দেবী গ্রামের বাসিন্দাদের স্বপ্নে দেখা দেন। দেবী বলেন, তিনিই তাদের সবকিছু রক্ষা করবেন। এরপর হতে গ্রামে এমন প্রথা চলে আসছে।’

এক কারখানার শ্রমিক বালাসাহেব বরুদ জানান, ‘শনি দেবী শক্তিমতী এবং করুণাময়ী। রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে যদি কেও চুরি করে তাহলে দেবীর কৃপায় সকালে সে আবার সেই বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হবে।’

অপরদিকে কয়েকজন গ্রামবাসী একটু ভিন্ন ভাষ্য দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ‘বুনো জন্তুর হাত হতে রক্ষা পেতে রাতে তারা ঘরের কবাট হালকাভাবে চাপিয়ে রাখেন। ৩শ’ বছর আগে গ্রামটিতে বন্যা হয়। সে সময় লোহা এবং পাথর দিয়ে দেবীর স্তম্ভ বানানো হয়। ফুল দিয়ে দেবীকে পূজা দেন গ্রামের বাসিন্দারা।

অপরদিকে গ্রামের সরকারি ব্যাংক ইউসিওর কাচের দরজাতেও কোনো তালা লাগানো হয় না। ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নগেন্দ্র সেহওয়াত বলেছেন, ‘এমন ব্যবস্থায় তাদের কোনো সমস্যা হয় না।’

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গ্রামে চুরির ঘটনাও ঘটে খুব কম। ২০১০ সালে সেখানে আসা এক পর্যটক অভিযোগ করেছিলেন তার গাড়ি হতে ৩৫ হাজার রুপি চুরি গেছে। তবে তা গ্রামের বাইরের ঘটনা। ওই গ্রামে চোর-ডাকাত এবং দুষ্ট লোকের সংখ্যাও কম।

গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, ঐতিহ্যের ধারা সব সময় অব্যাহত থাকবে। দেবীই তাদের গ্রামের অভিভাবক। হোটেলের ব্যবস্থাপক অমিত শর্মা বলেন, এটিই হলো আমাদের এই দেবীর বিশেষত্ব। তিনিই গ্রামের অভিভাবক।

তবে এমন ঘটনার কথা শুনে অনেকেই আশ্চর্য না হয়ে পারেন না। কারণ চুরি-ডাকাতি বর্তমান সময়ে এক মহামারির মতোই ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বের সব প্রান্তেই। অথচ এমন একটি এলাকা যেটিকে বর্তমান সমাজের এক দৃষ্টান্ত। পৃথিবীর সব জায়াগা যদি এমন হতো? তথ্যসূত্র: mysinchew.com

This post was last modified on জানুয়ারী ২০, ২০২২ 12:27 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

এপ্রিল মাসে ভারতে রেকর্ড গরমে ৯ জনের মৃত্যু

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্চ মাস থেকেই গরমের আভাস দেওয়া হয়েছিলো ভারতে। তবে এপ্রিলের…

% দিন আগে

এবার গাজর দিয়ে তৈরি হলো বাঁশি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা এতোদিন দেখে আসছি বাঁশ দিয়ে বাঁশি বানানো হয়। আর…

% দিন আগে

কুষ্টিয়ার ঐতিহাসিক ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২০ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে ওষুধের পাশাপাশি জীবন যাত্রায় কিছু বদল আনতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে খাওয়া-দাওয়ায় রাশ টানতে হবে। তবে…

% দিন আগে

প্রবৃদ্ধিশীল ফ্রিল্যান্সিং খাতে গুরুত্বারোপ: কুমিল্লায় ফ্রিল্যান্সার মিটআপ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফ্রিল্যান্সিং খাতের প্রবৃদ্ধির ওপর আলোকপাত করে সম্প্রতি ফ্রিল্যান্সার নিয়ে এক…

% দিন আগে

সবাইকে সাথে নিয়ে দেশের ঝান্ডা-বেসিসের পতাকা পুরো বিশ্বে বয়ে বেড়াতে চাই- এম আসিফ রহমান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নতুন প্রজন্মের কাছে ভিষণ জনপ্রিয় মুখ এম আসিফ রহমান। ওয়ার্ডপ্রেস…

% দিন আগে