হাই তোলার আজব সব ধ্যান-ধারণা!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষ মাত্রই হাই তোলে। তবে কম আর বেশি এটুকুই পার্থক্য। কিন্তু আমরা জানি ঘুম ধরলে মানুষ হাই তোলে। আসলেও কি তাই? হাই তোলার আজব সব ধ্যান-ধারণা নিয়েই রচিত হয়েছে এই প্রতিবেদনটি।

আমরা জেনে এসেছি যে, মানুষের যখন ঘুম ধরে তখন হাই তোলে। আর তখন তার ঘুমের ব্যবস্থা করা হয়। বা বলা হয়, ..অমুকের ঘুম পেয়েছে বিছানার ব্যবস্থা করো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই হাইতোলা নিয়েও রয়েছে নানা রসালো গল্প। আজ এই হাইতোলার বিষয়টি নিয়েই মূলত তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন।

আমাদের নিত্যদিনের একটি কাজ হলো হাই তোলা! ঠিক কি কারণে আমরা হাই তুলি তা কিন্তু আমরা জানিনা। তাছাড়া হাই তোলার ফলে শরীরে কি উপকার হয়? সেটিও আমাদের অজানা। তবে আমরা জানার চেষ্টা না করলেও গবেষকেরা কিন্তু এর পেছনে লেগে আছেন। আগে হয়তো এই হাই তোলা নিয়ে বিশদ গবেষণা হয়নি। কিন্তু তারপরও মানুষের মনে কৌতূহল রয়েছেই।

Related Post

হাই তোলা নিয়ে সবচাইতে পুরনো তত্ব সম্ভবত হিপোক্রেটিসের দেওয়া। সেখানে তিনি বলেন-

# হাই তোলার ফলে ‘ভালো’ বাতাস শরীরে ঢোকে এবং ‘খারাপ’ বাতাস বের হয়ে যায়।
# হাই তোলার ফলে শরীরে অনেকটা অক্সিজেন প্রবেশ করে আমাদের শক্তি দেয় আর বের হয়ে যায় কার্বন ডাই অক্সাইড।

যদিও গবেষণায় এইসব তত্ব প্রমাণিত হয়নি বরং এর বিপরীত তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে,

# যেসব মানুষের অক্সিজেনের দরকার বেশি থাকে তারা আসলে অন্যদের চাইতে বেশি হাই তোলেন না। আর তাই হাই তোলার ব্যাপারটাকে এখনও রহস্যই বলা চলে।

সবচাইতে সাম্প্রতিক তত্ব:

যার সঙ্গে বেশিরভাগ গবেষকই সহমত পোষণ করেন, তাহলো-

# হাই তোলার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক ঠাণ্ডা থাকে।
# মস্তিষ্ক যখন কোনো কারণে গরম হয়ে যায় তখনই আমাদের হাই তুলতে ইচ্ছা হয়।
# আমাদের মস্তিষ্ক খুব বেশি পরিমাণে শক্তি খরচ করে।

মস্তিষ্কর আকৃতি সারা শরীরের তুলনায় ছোট হলেও, এটি খরচ করে বিপাকীয় শক্তির প্রায় ৪০ শতাংশও। তাই মস্তিষ্ক প্রায়ই গরম হয়ে যায়, ঠিক যেভাবে আমাদের কম্পিউটার বেশিক্ষণ একনাগাড়ে চললে গরম হয়ে যায়। আমরা ক্লান্ত হয়ে গেলে, বোর হতে থাকলে অথবা অসুস্থ থাকলে গরম হয় মস্তিষ্ক। আর হাই তোলার কারণে মস্তিষ্ক একটু ঠাণ্ডা হয়ে আসে। তখন আমাদের মন আগের চাইতে একটু সজাগ হয়ে ওঠে।

মস্তিষ্কের তাপমাত্রা তিনটি বিষয়ের ওপরে নির্ভর করে:

১. ধমনীতে রক্ত প্রবাহের মাত্রা
২. রক্তের তাপমাত্রা
৩. মস্তিষ্কে সৃষ্ট তাপ।

হাই তোলার ফলে প্রথম দুইটি ক্ষেত্রে ভালো কাজ হয়। ধমনীতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় ও মস্তিষ্কে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা রক্ত প্রবেশ করে।

বিবর্তনবাদের গবেষণায় এক তত্বে ধারণা করা হয়, মানুষের মস্তিষ্ক যখন উন্নত হবার পর্যায়ে ছিলো তখনই খুলির আশেপাশে মস্তিষ্ক ঠাণ্ডা রাখার জন্য ধমনীগুলো তৈরি হতে থাকে। এ সময়েই হাই তোলার মত শারীরিক কর্মকাণ্ডের উদ্ভব ঘটে থাকে।

তবে যতো কথায় হোক না কেনো, সব মিলিয়ে একটি জিনিস আমরা ভালোভাবে বুঝতে পারি আর তা হলো, হাই তোলার ফলে আমাদের শারীরিক তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।

This post was last modified on মার্চ ১৯, ২০১৫ 3:32 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

এখন থেকে বড় পর্দায় দেখা যাবে রাতের স্বপ্ন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…

% দিন আগে

রাজবাড়ী বড় মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে