ভয়ঙ্কর বিষধর সাপের দ্বীপ কাহিনী!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাপের কথা শুনলে আমাদের অনেকেরই গা শিউরে ওঠে। অথচ তারপরও আমাদের জানার আগ্রহ শেষ হয় না। আজ এমনই এক ভয়ঙ্কর বিষধর সাপের দ্বীপ কাহিনী তুলে ধরবো।

দীর্ঘ ২০ মাইল দীর্ঘ এক দ্বীপ। পুরো দ্বীপ জুড়ে শুধু সাপ আর সাপ। অন্তত ৪ হাজার সাপের বিশাল এক রাজ্য গড়ে উঠেছে এই দ্বীপে। এই দ্বীপে কোনো মানুষ নেই, এমনকি কোনো বসতিও নেই। দ্বীপের একপাশ হতে আরেক পাশ পর্যন্ত একই প্রজাতির সাপের বিচরণ। আর তাই এই দ্বীপের নামকরণও করা হয়েছে সাপের দ্বীপ। যদিও এই দ্বীপের কেতাবি নাম ‘লা দ্য কুইমাদা গ্রানাদে’।

Related Post

আমাজন সংলগ্ন ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশ ব্রাজিলের সাও পাওলো সমুদ্র উপকূলে দ্বীপটি অবস্থিত। সাও পাওলো উপকূলে সোনালী তীক্ষ্ম আকৃতির মাথা সদৃশ হাজার হাজার সাপের বসবাস। বোথরোপস ইনসুলারিস নামের এই সাপ কেবলমাত্র এই অঞ্চলে বাস করে। সাধারণ বিষধর সাপের থেকেও প্রায় ৫ গুণ বিষধর এই বোথরোপস ইনসুলারিস সাপ পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর সাপ হিসেবেও স্বীকৃত। এই সাপ আকাশে উড়ন্ত পাখিকে ছো মেরে মুহূর্তে বিষের সাহায্যে নিস্তেজ করে উদরপূর্তি করে থাকে। এদের বিষ এতোই ভয়ানক যে, মানুষের মাংসকে মুহূর্তে গলিয়েও ফেলতে পারে। কথাটি রূপকথার মতো শোনা গেলেও বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং বিষধর এই সাপের অস্তিত্ত্ব রক্ষায় ব্রাজিল সরকার এই দ্বীপে মানুষের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

তবে অনেকেই এর আগেই বোকামি করে ওই বিপদজনক এলাকায় গিয়েছেন। বোথরোপস ইনসুলারিস সাপ দেখতে উজ্জ্বল হলুদাভ এবং বাদামী বর্ণের। এরা গড়ে ২৮ ইঞ্চি হতে সর্বোচ্চ ৪৬ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। মাথা তীক্ষ্ম আকৃতির হওয়ায় একে লানচিহেড ভাইপার নামেও ডাকা হয়ে থাকে। উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার অধিকাংশ মানুষের মৃত্যুর কারণ হলো এই বিষধর সাপ। জনমানবহীন নিজ রাজ্যে এরা সাধারণত পাখি খেয়ে জীবন ধারণ করে। টিকিটিকিও এদের অন্যতম খাবার। এমনকি এরা অন্য সাপও ভক্ষণ করে ফেলে অনেক সময়।

সাও পাওলোর সমুদ্র ঘেষা অপরূপ এক নৈসর্গিক এই দ্বীপের আকৃতি ৪ দশমিক ৬ মিলিয়ন বর্গফুট। এটিই পৃথিবীর একমাত্র স্থান, যেখানে এই প্রজাতির সাপ বাস করে। আর তাই বলা হয় ব্রাজিলের দীর্ঘ ভয়ংকর ‘সর্প দ্বীপ’।

এখানে প্রবেশে সাধারণ মানুষের অনুমতি না থাকলেও প্রতিবছর সাপের ওপর গবেষণা করতে কিছু বিজ্ঞানীকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সাপের বিষময় রাজ্যেও নিয়মিত বণ্যপ্রাণী শিকারীদের আগমন ঘটে থাকে। কারণ, লিচেনহেডের বিষ মহামূল্যবান। কালো বাজারে এর দাম প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার পাউন্ড। এদের অবলুপ্তির পেছনে এটাও একটা বড় কারণ হিসেবে দেখছেন গবেষকরা।

উল্লেখ্য, প্রায় ১১ হাজার বছর আগে সমুদ্র উচ্চতার ফলে ব্রাজিল হতে এই দ্বীপ বিচ্ছন্ন হয়ে যায়। তখন এই দ্বীপে সাপের বসবাস শুরু হয়। এই সাপের বিষ অন্যান্য সাপের বিষের চেয়ে অন্তত ৫ গুণ শক্তিশালী। এই সাপের কামড়ে একজন মানুষের ৭ শতাংশ মৃত্যু সম্ভাবনা থাকে।

This post was last modified on জুলাই ২৪, ২০২১ 7:13 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

সকালে খালি পেটে উষ্ণ পানিতে লেবু-মধুর বদলে খেতে পারেন তেজপাতা ভেজানো পানি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গ্যাসের ধাত থাকলে সকালে খালি পেটে উষ্ণ পানিতে লেবুর রস…

% দিন আগে

শখ ও জয়ের ওয়েব ফিল্ম “ত্রিভুজ’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই ওয়েব ফিল্মে জনপ্রিয় অভিনেতা এবং উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের…

% দিন আগে

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত: নিহত আরও অর্ধশত ফিলিস্তিনি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে হামলায় প্রায়…

% দিন আগে

‘অবিবাহিতরা অর্ডার করছেন দিনরাত’: বেশি পার্সেল আসায় নালিশ নিরাপত্তারক্ষীর!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী জানিয়েছেন, আবাসনের এফ ব্লকের যে অবিবাহিতরা রয়েছেন,…

% দিন আগে

নেপালের প্রাকৃতিক দৃশ্য: পর্যটকদের যেনো হাতছানি দিয়ে ডাকে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২২ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে

ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি থাকলেই কী শরীরে সারাদিন ভোগায় ক্লান্তি?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি কী সারাদিন ক্লান্তিতে ভোগেন? কাজ করতে গিয়ে তুলতে থাকেন…

% দিন আগে