দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ধর্মীয় হেনস্থার শিকার হয়ে যাঁরা পালিয়ে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে নাগরিকত্ব দেবে ভারত। তাহলে তসলিমাও কি ভারতের নাগরিক হতে পারবেন?
ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ধর্মীয় হেনস্থার শিকার হয়ে যাঁরা পালিয়ে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে। সেজন্য ভারতের ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংশোধনী প্রস্তাব তৈরিও করেছে। শুধুমাত্র বিতাড়িত হিন্দুরাই নন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ হতে ধর্মীয় নিগ্রহের কারণে যেসব বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, শিখ, জৈনদের ভারতে আশ্রয় নিতে হয়েছে, তাঁদের সবাইকে বৈধ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ভারত সরকার। যদিও আশ্রয়প্রার্থী মুসলিমদের ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আর তাই এক্ষেত্রে প্রথমেই উঠে আসছে ভারতে আশ্রিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের নাম।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের পাশাপাশি ১৯৪৬ সালের বিদেশী নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯২০ ও ১৯৫০ সালের পাসপোর্ট আইনেরও সংশোধন করতে যাচ্ছে। পাসপোর্ট আইন, যা মূলত ভারতে প্রবেশের অধিকারকে নির্দিষ্ট করে, তাতে একটি মৌলিক পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। ধর্মীয় কারণে বিতাড়িত বা দেশছাড়া ও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে আশ্রয় নেওয়া মানুষজনকে এখন থেকে আর অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে না। তসলিমা নাসরিনের মতো যাঁরা বৈধ পাসপোর্টসহ এদেশে এসে আশ্রয় চাইবেন, তাঁদের দীর্ঘ মেয়াদি ভিসা দেবে সরকার।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়েছে, নাগরিকত্বের ক্ষেত্রেও সুযোগ পেতে পারেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন; যদি মুসলিমদেরও এই সুযোগের আওতায় আনা হয়। এতে বলা হচ্ছে, পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ হতে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পূর্বে যাঁরা এদেশে এসেছেন, তাঁরাই নাগরিকত্ব চাইতে পারেন। দু’ধরনের সুযোগ থাকবে তাঁদের জন্য। প্রথমত: নথিভুক্তিকরণের মাধ্যমে নাগরিকত্ব গ্রহণ; সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ৭ বছর এদেশে থাকতে হবে। আর দ্বিতীয় সুযোগটি হলো, স্বাভাবিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নাগরিকত্ব; যারজন্য ন্যুনতম ১২ বছর বসবাস করতে হবে ভারতে।
খবরে জানা যায়, সংশোধনী প্রস্তাবের যে খসড়া তৈরি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, সেটিতে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক ইতিমধ্যেই সায়ও দিয়েছে। এই নীতিটি, বলাই বাহুল্য যে, শুধু আসাম বা উত্তর পূর্ব ভারতের অন্যত্র নয়, উত্তর পশ্চিম ভারতের বেশ কিছু অংশেও ধর্মীয় কারণে উদ্বাস্তুদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা যায়, পাসপোর্ট আইনের সংশোধনী প্রস্তাবটি সংসদে উপস্থাপিত হওয়ার পর সেটি আলোচনার জন্য খোলা থাকবে দু’মাস। আর পরিবর্তিত নাগরিকত্ব আইন উপস্থাপিত হবে মূলত বিলের চেহারাতেই।
আইনটি পাস হলে তসলিমা নাসরিনসহ এমন অনেক বিতর্কিত ব্যক্তি ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন সহজেই- এমনটিই মনে করা হচ্ছে।