দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে মনও ভালো থাকে না। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অনেকেই মাংস খেয়ে থাকেন। কিন্তু অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার কারণে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। কী কী প্রভাব পড়তে পারে সে বিষয়ে জানতেই আজকের এই প্রতিবেদন।
স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অথবা শরীরের পুষ্টির জন্য আমরা অনেক পুষ্টিকর খাদ্য বা আমিষ জাতীয় খাদ্য খেয়ে থাকি। যেমন মাংস এক ধরনের প্রোটিন জাতীয় খাবার। যা পানি, প্রোটিন এবং চর্বির সমন্নয়ে গঠিত। শরীরের কোষ তৈরির জন্য প্রতিদিন আমাদের কিছুটা প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু তাই বলে অতিরিক্ত প্রোটিন আমাদের দেহের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
সংবাদ মাধ্যমের এক খবরে জানা যায়, আমেরিকান একটি কৃষি বিষয়ক সংস্থা তাদের এক তথ্যে বলেছে যে, প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ প্রতিদিন ২৮ গ্রামের মতো মাংস খেতে পারে। তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত মাংস খেলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।েআর তাই মাংস খেতে হবে বুঝে-শুনে।
আজ থেকে দু’বছর আগে ২০১৩ সালে পুষ্টি এবং ক্যান্সারের ওপর ইউরোপিয়ান প্রসপেকটিভ ইনভেস্টিগেশন (ইপিআইসি) নামে একটি সংস্থা এ বিষয়ে গবেষণা চালায়। গবেষণায় দাবি করা হয় যে, মাংস খাওয়ার সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগ ও ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে।
অতিরিক্ত মাংস, বিশেষ করে লাল মাংস খাওয়ার ফলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।
ফুসফুস ক্যান্সার
খাদ্যনালীর ক্যান্সার
লিভার ক্যান্সার
মলাশয় ক্যান্সার
এমনকি অগ্নাশয় ক্যান্সার হতে পারে।
হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগের সঙ্গে মাংস খাওয়ার অনেক সম্পর্ক রয়েছে বলে গবেষকরা তাদের গবেষণায় পেয়েছেন। অতিরিক্ত মাংস খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে, স্ট্রোক, হার্ট ফেইলও হতে পারে। ৪৫ হতে ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে নিয়মিত মাংস খাওয়ার কারণে হৃৎপিণ্ডের রোগ হওয়ার ঝুঁকি ৩ গুণ বেড়ে যায়।
হারর্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ১ মিলিয়ন মানুষের ওপর একটি গবেষণা চালানো হয়। এ গবেষণায় দেখা যায় যে, যারা নিয়মিত ৫০ গ্রাম বা এর চেয়ে বেশি মাংস খান, তাদের হার্টের অসুখ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় ৪২% ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে ১৯%।
ওজন বৃদ্ধি এবং রোগমুক্ত রাখার জন্য পশুকে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়ে থাকে। এসব পশুর মাংস খেলে মানুষের শরীরেও এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রবেশ করে যা মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
সাধারণত দেখা যায় কোরবানী ঈদ এলে পশুকে এমন নানা ধরনের খাদ্য বা ওষুধ গরুকে খাওয়ানো হয়। যেগুলো খুবই ক্ষতিকর। যেমন ১৪ মাসের মধ্যে সদ্য জন্ম নেওয়া ৩৭ কেজি ওজনের একটি বাছুরকে ৩ হতে ৪ মণ ওজনে পরিণত করার জন্য বিভিন্ন প্রোটিন জাতীয় খাবার এবং হরমনাল ওষুধ খাওয়ানো হয়ে থাকে। এগুলো পশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
সাধারণত গবাদিপশুকে Estradiol, Progestereone, Zeranol, বা Trenbolone Acetate নামে হরমনাল ওষুধ খাওয়ানো হয়ে থাকে। আবার ওজন বাড়ানোর জন্য Melengesterol Acetate নামে এক প্রকার হরমোনাল ওষুধ খাওয়ান হয়। এমন পশুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে এসব হরমোন প্রবেশ করে। এতেকরে দ্রুত একজন মানুষের ওজন বেড়ে যেতে পারে, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। এগুলো মানুষের জন্য ক্ষতি করে থাকে। যেমন অল্প বয়সে প্রজনন ক্ষমতা অর্জন কিংবা স্পার্ম এর সংখ্যা কমে যেতে পারে।
অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার কারণে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। যেমন:
# ব্রেইনের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
# স্মৃতি শক্তি এবং চিন্তা শক্তি হ্রাস পায়।
# শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে।
# পশুদের খাওয়ানো অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে মানুষের শরীরে নানা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
যদিও মাংস একটি লোভনীয় এবং মজাদার খাবার। তারপরও সুস্থতার জন্য মাংস খেতে হবে নিয়ম করে অর্থাৎ পরিমিত। তাই অবশ্যই সবাই নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। তা না হলে এর কুফল আমাদের সকলকেই ভোগ করতে হবে। তাই সবাই সচেতন হোন- সুস্থ্য সুন্দর জীবন যাপন করুন।
তথ্যসূত্র: bd-article.com এর সৌজন্যে।
This post was last modified on জানুয়ারী ৩০, ২০২০ 2:16 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে সময়টিতে বেশি সজাগ থাকতে হয় সেটি হলো গর্ভাবস্থা। এই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গ্রাহকদের জন্য ব্যাংকিং সেবা উন্নত করার লক্ষ্যে দেশের প্রথম প্রজন্মের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সতর্ক করার পরও গ্রাহকদের অতিরিক্ত প্রমোশনাল এসএমএস পাঠানোর কারণে গ্রামীণফোন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুফান নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। দেশের মাটিতে ব্যাপক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাশিয়ার রাজধানী মস্কো ও দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে শনিবার রাত…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক শতাব্দী পর হদিস পাওয়া গেলো জুতোসমেত পায়ের অংশ! এভারেস্টের…