শরণার্থী সমস্যা: প্রতি ১০ মিনিটে জন্ম হচ্ছে একজন রাষ্ট্রহীন শিশুর!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বৈশ্বিক শরণার্থী সমস্যা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। হিংসা, হানাহানি ও নানা বৈষম্যের কারণে দিন দিন শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি ১০ মিনিটে জন্ম হচ্ছে একজন রাষ্ট্রহীন শিশুর।

শুধু তাই নয়, এসব রাষ্ট্রহীন শিশুরা চিকিৎসাসেবা, শিক্ষা ও ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হতেও বঞ্চিত হবে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর গত মঙ্গলবার এসব তথ্য দিয়েছে। জাতিসংঘ এক সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। এএফপির খবরে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, রাষ্ট্রহীন শিশুদের জন্মের দীর্ঘমেয়াদি কিছু প্রভাব চিহ্নিত করে ইউএনএইচসিআর একটি প্রতিবেদন তৈরি করে সংস্থাটির প্রধান আন্তোনিও গুয়েতেরেস গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের সদর দপ্তরে প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিক উপস্থাপন করেন।

Related Post

এতে দেখা যায়, সিরিয়ায় শিশুরা শুধুমাত্র তাদের বাবার পরিচয়ে নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে। কিন্তু ৪ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে দেশটির ৪০ লাখেরও অধিক মানুষ পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। আর এসব শরণার্থীদের পরিবারের ২৫ শতাংশই হলো পিতৃহীন। অন্তঃসত্তা অবস্থায় সিরিয়া ছেড়ে পালিয়েছে- এমন কয়েকজন নারী জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের বলেছেন যে, পরিবারের সঙ্গে কোনো একদিন দেশে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যেতে পারে তাদের। এর কারণ হলো, জন্মসনদ ছাড়া তারা কোনো অবস্থাতেই নিজেদের সন্তানদের নাগরিকত্বের প্রমাণ করতে পারবেন না।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়েছে, সিরিয়া যুদ্ধের জন্য হাজার হাজার মানুষ ইউরোপে শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছে। সীমান্ত পেরোনোর সময় ও অন্য দেশে পৌঁছানোর পর অনেকেই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ইউএনএইচসিআর বলেছে যে, ২০টি দেশ সবচেয়ে বেশি শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। সেখানে প্রতিবছর অন্তত ৭০ হাজার রাষ্ট্রহীন শিশুর জন্ম হচ্ছে। তারা বলেছেন, এই হার হলো প্রতি ১০ মিনিটে একজন।

জাতিসংঘের ওই সংস্থাটির প্রধান আন্তোনিও গুয়েতেরেস বলেন, এসব শিশু নাগরিকত্বের অভাবে শৈশব হতে শুরু করে বৈষম্য ও হতাশার মুখোমুখি হবে আজীবন। লাখ লাখ শিশু নিজেদের অধিকার এবং সুরক্ষা হতে বঞ্চিত হচ্ছে, যা শুধু নাগরিকত্বের মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যেমন ৩০টি দেশে মৌলিক চিকিৎসাসেবা পাওয়ার জন্য জাতীয় পরিচয়ের প্রমাণ দিতে হয়। আবার ২০টি দেশে দেশহীন শিশুদের টিকা পর্যন্ত দেওয়া যায় না পরিচয় হীনতার কারণে।

উল্লেখ্য,ইউএনএইচসিআর ২০২৪ সাল নাগাদ কোনো রাষ্ট্রহীন মানুষ থাকবে না বলে এক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সংস্থাটির প্রস্তাব হলো, বৈষম্যমূলক আইনগুলো সংস্কার করে রাষ্ট্রহীন শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করা। যেখানেই জন্ম হোক না কেনো, শিশুদের স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সেই দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া উচিত। শুধু গত মাসে (অক্টোবর) ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে কমপক্ষে ২ লাখ ১৮ হাজার শরণার্থী এবং অভিবাসী ইউরোপে প্রবেশ করে। এভাবে প্রতিনিয়ত শরণার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে।

This post was last modified on জুন ৯, ২০২০ 12:29 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

টাইটানিকের সবচেয়ে ধনী যাত্রীর সেই স্বর্ণের পকেট ঘড়িটি রেকর্ড দাম ১৬ কোটি টাকায় বিক্রি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক টাইটানিক জাহাজ ট্রাজেডির…

% দিন আগে

আজ মহান মে দিবস: শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ ১লা মে, মহান মে দিবস। বঞ্চনা, নির্যাতন ও বৈষম্যের…

% দিন আগে

নদীমাতৃক বাংলাদেশের এক চিরাচরিত দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ১ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

অফিসে এসি না থাকলে গরমে সারাদিন পরিশ্রম করে সুস্থ থাকবেন কীভাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক অফিসেই এসির ব্যবস্থা থাকে না। এসি না থাকলেও কাজ…

% দিন আগে

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা: এক মহা দুর্যোগের শিকার এশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুরো বিশ্বের জলবায়ুর সঙ্গে তুলনা করলে প্রথমেই উঠে আসে এশিয়ার…

% দিন আগে

এনার্জিপ্যাকের সঙ্গে চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও…

% দিন আগে