দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৬০ এর দশকের কিংবদন্তী অভিনেত্রী মালা সিনহা ভারতের দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমন্ত্রণপত্রের কোথাও তাঁর নাম না থাকায় প্রচন্ড অপমানবোধ করেছেন বলেও জানান মালা। তিনি বলেছেন, “আমি এই পুরষ্কার গ্রহণ করবো না। তারা আমার সাথে অভদ্র আচরণ এবং আমাকে অপমান করেছেন। একজন শিল্পীর সাথে কীভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটা তাদের শিখিয়ে দেয়া লাগবে?”
“তারা আমার প্রতি চরম অবিচার করেছেন। তারা এমনকি আমন্ত্রনপত্রে আমার নামটি পর্যন্ত উল্লেখ করেনি! যখন ফালকে কমিটির চেয়ারম্যান আমার বাসায় এসে আমাকে ভারতীয় চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে বললেন, আমি খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু আমন্ত্রণপত্র হাতে পেয়ে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পুরস্কারের জন্য মনোনীত অন্যদের নামের পাশে আমার নামটি ছিল না!”
“আশা ভোঁসলের পাশে আমার নাম না লিখেই তারা আমাকে আমন্ত্রণপত্র দিতে এসেছে, এর চেয়ে তাঁরা যদি আমার গালে চড় লাগাতেন, সেটাও অনেক ভালো ছিল।”
“বিষয়টি আমাকে যার পর নাই মর্মাহত করেছে। একজন শিল্পীর জন্য এর চেয়ে অপমানজনক আর কী হতে পারে! আমি বলে বোঝাতে পারব না, বিষয়টি আমাকে কতটা বিচলিত করেছে। আমি স্বীকার করছি আশা ভোঁসলে অনেক বড় গুণী শিল্পী, কিন্তু আমি কি এতোটাই অপাংকেতয়? তাদের দেয়া স্বীকৃতি আমার প্রয়োজন নেই।” বলেছেন মালা সিনহা।
উল্লেখ্য যে, হিন্দি চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করা হয় গুণী চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের। হিন্দি চলচ্চিত্র অঙ্গনের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটির জন্য এ বছর মনোনীত হয়েছিলেন ‘ধুল কা ফুল’খ্যাত নেপালি বংশোদ্ভূত বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মালা সিনহা। কিন্তু দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার কমিটির আচরণে ব্যথিত হয়ে পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করেছেন ৭৬ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী।
১৯৩৬ সালে নেপালে জন্মগ্রহণ করেন মালা সিনহা। ৫০ থেকে ৭০ দশক পর্যন্ত বলিউডে রাজত্ব করেছেন এ অভিনেত্রী। হিন্দি ছবির পাশাপাশি বাংলা ও নেপালি ছবিতেও অভিনয় করেছেন। ‘পিয়াসা’, ‘ধুল কা ফুল’, ‘দিল তেরা দিওয়ানা’, ‘গুমরাহ’, ‘আঁখে’, ‘শহরের ইতিকথা’, ‘লুকোচুরি’সহ শতাধিক ছবিতে অভিনয়নৈপুণ্য দেখিয়েছেন গুণী এ শিল্পী।
মালা সিনহা আরো বলেন, “৬০ এর দশকে আমি হলিউড থেকে দুই-দুইটি ছবির প্রস্তাব পেয়েছিলাম। আমি তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিলাম এই বলে যে তাদের চলচ্চিত্র আমার সংস্কৃতির সাথে যায় না। কিন্তু আজ আমি আমার ঘরেই এমন অপমান হবো জানলে সেদিন আরো চিন্তা-ভাবনা করতাম।”