দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুনিয়া ছাপিয়ে যাওয়া কিংবদন্তি বক্সার মুহাম্মাদ আলীকে নিয়ে তথ্যের যেনো শেষ নেই। খ্যাতির শীর্ষে ওঠা এই কিংবদন্তির জীবনী এক বিশাল ব্যপ্তি ঘটেছে। কিছু অজানা তথ্য রয়েছে এই প্রতিবেদনটিতে।
সর্বকালের সেরা মুষ্টিযোদ্ধা কিংবদন্তি মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর জীবনের অনেক অজানা তথ্য রয়েছে। সেগুলো নিয়েই আজকের এই প্রতিবেদন।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনবারের হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন এবং অলিম্পিক স্বর্ণপদকজয়ী এই ক্রীড়াবিদকে নিয়ে লেখা হয়নি এমন তথ্য খুব একটা বেশি নেই। দুনিয়া জুড়ে মানুষ যানে তাঁর অতীত ইতিহাস। তারপরেও অনেকের অজানা কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
২০০৬ সালে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় নিজের বই ‘দ্য গ্রেটেস্ট অফ অল টাইম’ পাশে রেখে ছবি তোলেন মুহাম্মাদ আলী।
একাধিকবার নাম বদল
১৯৬০ এর দশকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর কেন্টাকির তরুণ ক্যাসিয়াস ক্লে হতে মুহাম্মাদ আলী নাম নেওয়ার বিষয়টি অনেকেরই জানা রয়েছে।
‘তবে খুব স্বল্প সংখ্যক মানুষই জানে যে, তার নাম প্রথমবার বদলে ক্যাসিয়াস এক্স হয়েছিল’।
তাঁর দেওয়া তথ্য মতে, হেভিওয়েট চ্যাম্পয়ন সানি লিসটনকে হারানোর ঠিক পরদিন ১৯৬৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে তার নাম বদল হয়। এর দুই সপ্তাহ পর ৬ মার্চ তিনি ঘোষণা দেন যে, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা ইলাইজা মুহাম্মাদ তাকে নতুন নাম দিয়েছেন ‘মুহাম্মাদ আলী’।
প্রতিবেদনের ধারণা মতে, বর্ণবাদবিরোধী নেতা ম্যালকম এক্সের নাম ধরেই তিনি ক্যাসিয়াস এক্স নাম নিয়েছিলেন।
ভ্যাটিকানে বৈঠক শেষে একে অপরকে অটোগ্রাফও দেন মুহাম্মাদ আলী ও পোপ দ্বিতীয় জন পল।
১৯৬৭ সালের ২৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে মোহাম্মদ আলীর শিরোপা কেড়ে নেওয়া হয়।
মোহাম্মদ আলী সে সময় সেনাবাহিনীতে না যাওয়ার পিছনে ধর্মীয় কারণ দেখিয়েছিলেন। তরুণ বয়স হতেই উগ্রবাদী আফ্রিকান আমেরিকান ইসলামীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল মোহাম্মদ আলীর। পরবর্তী সময়ে তিনি মরমিবাদের দিকে ঝুঁকে যান।
২০১৫ সালের শেষদিকে প্রকাশিত ‘অ্যাপ্রোচিং আলী’র লেখক মিলার বলেন, ‘২০০৫ সালের দিকে আলী নিজেকে সুফি ঘোষণা করেন। ইসলামের সব ধারার মধ্যে সুফিবাদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যাওয়ার কথা বলেন মোহাম্মদ আলী।’
সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ৩ বছর ৭ মাসের নির্বাসন হতে আলী খেলায় ফিরেছিলেন হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নের প্রতিদ্বন্দ্বী জেরি কুয়ারির সঙ্গে লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে।
সে সময় সফল প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল মোহাম্মদ আলীর। তবে ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে তাকে অন্য লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হয়।
১৯৮৪ সালে ৪২ বছর বয়সে মোহাম্মদ আলীর পারকিনসন রোগ ধরা পড়ার পর অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন কৌশল অবলম্বন করেন তিনি।
‘তিনি মনের ভাব প্রকাশের জন্য হাত ও আঙুল, মুখের ভাব, চোখের ইশারার মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন।’
এ সময় তিনি বুড়ো আঙুল দিয়ে শব্দ করে দর্শনার্থীদের চমকে দিতেন। আবার হাত মেলানোর সময় সুড়সুড়ি দেওয়া ছাড়াও প্রায় সবাইকে খ্যাপাতেন নানাভাবে।আবার ‘হাঁটতে পারলেও প্রায়ই তিনি হুইলচেয়ারে কিংবা ইজিচেয়ারে বসে থাকতেন।’
এমন নানা গল্প রয়েছে সর্বকালের সেরা মুষ্টিযোদ্ধা কিংবদন্তি মোহাম্মদ আলীর জীবনীতে।