দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেক গুহার গল্প শুনেছি। তবে আজ রয়েছে আরেক ব্যতিক্রমি রহস্যময় গুহা হ্যাংসন ডুং এর কাহিনী।
আদিম যুগে মানুষ প্রতিকূল পরিবেশে টিকতে না পেরে বিভিন্ন পাহাড় পর্বতের গুহাকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করতো। সেই গুহাগুলো এখনও রয়ে গেছে। পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকতে থাকতে অনেক গুহা হয়ে উঠেছে রহস্যময় কিংবা ভয়ংকর। এমনই একটি গুহা হলো এই হ্যাংসন ডুং। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং ভয়ংকর গুহার একটি।
এই গুহাটি অবস্থিত ভিয়েতনামের কোং বিন প্রদেশের বো টাচ জেলায়। ২৫ বছর আগে ১৯৯১ সালে স্থানীয় ‘হো-খানহ’ নামে এক ব্যক্তি এই গুহাটি প্রথম আবিষ্কার করেন।
ভিয়েতনামের জাতীয় উদ্যান ফুং না কিং ব্যাংয়ের নিকটেই হ্যাংসন ডুং-এর অবস্থান। দূর হতে হ্যাংসন ডুংকে দেখতে দোতলা বাসের মতো মনে হয়। যে কারণে হ্যাংসন ডুং অতি আকর্ষণীয় গুহা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
এই গুহার ভিতরে রয়েছে ভয়ংকর সব প্রাণী। গবেষণার কাজে গুহাটির ভিতরে যারা গিয়েছিলেন তাদেরকে পদে পদে নানা বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। গুহার ভিতরে তাদের মোকাবেলা করতে হয়েছে বিষধর সাপ, বড় বড় মাকড়সা, অদ্ভুত সব প্রাণীদের সঙ্গে।
এছাড়া এই গুহার ভিতরে রয়েছে চেনা-অচেনা বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদও। গুহার মধ্যে রয়েছে পানির ফোয়ারা, একাধিক জঙ্গল। গুহার ভেতর সুরঙ্গপথ রয়েছে প্রচুর। এসব সুরঙ্গ দিয়ে অনায়েসেই ভিয়েতনামের এক প্রদেশ হতে অন্য প্রদেশে যাতায়াত করা সম্ভব।
১৯৯১ সালে গুহাটি আবিষ্কৃত হলেও দীর্ঘদিন এটিকে নিয়ে কোনো সংগঠন গবেষণা করেনি। প্রথম দিকে এই গুহায় আসতে স্থানীয় লোকজন ভয় পেতো। এর কারণ হলো তারা এই গুহার তলদেশের নদী হতে উচ্চস্বরে শব্দ শুনতে পেতো। গুহাটি আবিষ্কারের পর এখনও এটি সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। কারণ এই গুহাটি অত্যন্ত ভয়ংকর গুহা। এখানে পৃথিবীর ভয়ংকর সব জীবজন্তু ও পোকামাকড় বসবাস করে।
২০০৯ সালের ১০ হতে ১৪ এপ্রিল ব্রিটিশ গুহা গবেষণা সংগঠনের প্রধান হাওয়ার্ড এবং ডেভ লেমবার্ট এই গুহাটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তাদের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই গুহাটির সবচেয়ে বড় কক্ষটির পরিমাপ ২০০ মিটার উচ্চ ও ১৫০ মিটার চওড়া, যা মোট ৫.৬ কিলোমিটার। গবেষক দল গুহাটির আয়তন পরিমাপ করতে পারলেও এই গুহাটির শেষ খুঁজে বের করতে পারেননি!
গুহাটি ভয়ংকর হলেও এর ভিতরে যারা গিয়েছেন তাদের মতে, ভিতরে গেলে মনে হবে কোনো একটি অন্য জগতে এসেছেন তারা। বাইরের জগত হতে একেবারেই ভীন্ন ও বৈচিত্র্যময় ও রহস্যময় গুহা হলো এই ‘হ্যাংসন ডুং’!