দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সন্ত্রাসবাদে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ এনে ইসলামবিষয়ক বক্তা জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, জাকির নায়েকের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে (আইআরএফ) বে-আইনি ঘোষণার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
ভারত সরকারের পক্ষ হতে বলা হচ্ছে, সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে জাকির নায়েক অন্তত ৫০ জনকে উৎসাহিত করেছেন। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে চালানো তদন্তে এমন তথ্য ওঠে আসে বলে দাবি করা হয়েছে।
ভারতের সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গতকাল (শনিবার) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে দুই দফায় দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাই তাঁর বক্তব্যের খুঁটিনাটি বিষয় পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে বলা হয়েছে, জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনেকেই মুখ খুলেছেন। ২০০৬ সালে ভারতের ঔরাঙ্গাবাদে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ফিরোজ দেশমুখ স্বীকার করেছেন যে, তিনিও জাকির নায়েকের বক্তৃতায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।
গত বছর ভারত হতে আরব আমিরাতে পালানোর সময় গ্রেফতার হওয়া আফশা জাবিনও জাকির নায়েকের বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।
একই কথা বলেছেন ইন্ডিয়ান মুজাহিদীন কাতিল আহমেদ সিদ্দিকীও। তাছাড়া আইএসের মদদে ভারতে সংগঠন গড়ে তুলতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া মুদাব্বর শেখ, মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ খান, আবু আনাস, মোহাম্মদ নাফিস খানের মতো অনেকেই বলেছেন, তাঁরা জাকির নায়েকের বক্তৃতা শুনে সন্ত্রাসবাদের পথে পা দিয়েছেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশটিতে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ এনে জাকির নায়েকের আইআরএফের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারা প্রয়োগ করতে চলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
অভিযোগ উঠেছে, জাকির নায়েকের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আইআরএফের সদস্যরা জোর করে ধর্মান্তরকরণের সঙ্গেও নাকি যুক্ত। আর প্রতিষ্ঠানটি একটি স্কুলে বে-আইনি কার্যক্রম পরিচালনা করে। অনুদানের নামে বিভিন্ন সময় প্রচুর পরিমাণ অর্থও সংগ্রহ করা হতো এই প্রতিষ্ঠানের নামে। ওই অর্থ কোথায়, কী কাজে লাগানো হয়েছে তা নিয়েও রহস্য রয়েছে। জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে ক্রমাগত তথ্য হাতে পাওয়ার পর চলতি মাসের শুরুতেই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিকট আইন মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদন পাঠিয়ে আইআরএফকে নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা হয়। ওই হামলা নিহত জঙ্গিদের দু’জন জাকির নায়েকের বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর হতেই জাকিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু করে ভারত সরকার।