দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঝড় তোলা সেই ‘তরকারিওয়ালি’ কুসুম এখনও অনলাইনে ভাইরাল। তাকে নিয়ে মানুষের আগ্রহরে যেনো শেষ নেই। এখনও সেই ‘তরকারিওয়ালি’ কুসুমকে নিয়ে নানা কথা।
সত্যিই বাবা-মায়ের ঘাড়ে চেপে বসে থাকা অার দশজন মেয়ের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এই নেপালী মেয়ে কুসুম। তরকারী বিক্রি করে বাবা মাকে সাহায্য করছেন তিনি। তাইতো মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন।
এই কুসুমের কাহিনীটা শুরু করেন নেপালি ফটোগ্রাফার রূপচন্দ্র মহাজন। অনুমতি নিয়েই ওই নেপালি সবজি বিক্রেতা তরুণীর ছবি তোলেন তিনি।
তারপর দু’টি ছবি পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরপর ‘তরকারিওয়ালি’(#Tarkariwali) হ্যাশট্যাগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় সেই তরুণীর ছবি।
একটি ছবিতে দেখা যায় মেয়েটি মোবাইল ফোন কানে বাজারে সবজি বিক্রিতে ব্যস্ত। অন্য ছবিতে গোরখা ও চিতওয়ানের সংযোগ ব্রিজের ওপর ভারী সবজির ঝুড়ি কাঁধে হাস্যোজ্জ্বল পথচলা।
‘তরকারিওয়ালি’ নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া সবুজ পোশাকের এই তরুণীর নাম কুসুম শ্রেষ্ঠা। সে পশ্চিম নেপালের গোরখা ভুমলিচকের দেবস্থান গ্রামে বসবাস করে।
কুসুম শ্রেষ্ঠা চিতওয়ানের একটি স্কুলে ম্যানেজমেন্টে একাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। অত্যন্ত সাধারণ পরিবারের মেয়ে কুসুম। চাষাবাদ করেই সংসার চলে তাদের পরিবারের। পড়ালেখার পাশাপাশি সবজি বিক্রিতে বাবা-মাকে সাহায্য করে এই কুসুম। প্রথমে মেয়েটির পরিচয় প্রকাশ না পেলেও তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তার পরিচয় বেরিয়ে আসে।
তবে পরিচয় প্রকাশ পাওয়ার পরও থেমে নেই অনলাইন দুনিয়া। কুসুমকে নিয়ে এখনও প্রতিনিয়ত লেখালেখি হচ্ছে।
অনেকেই কুসুমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ফেসবুকে রেহান আহমেদ নাকে একজন লিখেছেন, পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করতে ও বাবা-মার কষ্ট দূর করতে এমন কাজ করা সত্যিই দারুন একটি বিষয়। কাজকে অবহেলা নয়, কাজে কেও ছোট হয় না। আর নিজেকে ছোটও মনে হয় না। একদিন সে অনেক উন্নতি করবে। তারজন্য শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইলো।
মো: রহিম লিখেছেন, লেখাপড়ার সাথে সাথে বাবা-মাকে সাহায্য করছে। সেইজন্য এই বোনকে সকলের দোয়া করা উচিৎ।
নাসির মোহাম্মদ নামে একজন লিখেছে, তাকে তরকারীওয়ালী বলে ছোট করতে চাই না। বর্তমানে বেঁচে থাকার তাগিদে মেয়েরা কতো রকম খারাপ কাজ করে। কিন্তু এই মেয়েটি তা না করে, একটি উত্তম পথ বেছে নিয়েছে। ধন্যবাদ এই তরুণীকে।
এভাবে নানা মন্তব্য করা হয়েছে কুসুমকে। কারণ হলো আমাদের সমাজে দেখা যায়, বাবা-মায়ের ঘাড়ে চেপে পড়ালেখা, পোশাক-আশাক সবকিছুই করে। বাবা-মায়ের জন্য সেসব বিষয় বার্ডেন হচ্ছে কি না তা হয়তো তারা কখনও খেয়ালই করে না। অথচ নেপালের কুসুম সত্যিই আমাদের এই সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কারণ আমাদের দেশে কখনও কখনও কেও কেও প্রাইভেট পড়ানো বা কোনো অস্থায়ী জব করে থাকে। অথচ নেপালের এই কুসুম ঘাড়ে করে ফলনিয়ে দূরে বাজারে গিয়ে বিক্রি করছে! সত্যিই এক অসাধারণ দৃশ্য এটি। এমন একজনকে কেনোই বা কেও বাহবা জানাবে না? তিনি কেনই বা সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত হবেন না? আমরা এই কুসুমকে সাধুবাদ জানাই। তার পথচলা হোক সুখকর সেই প্রত্যাশা আমাদের।