দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বহু কৃষকের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করেছে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন। বহু কষ্ট করে যে ফসল তারা ফলিয়েছিল শেষ মুহূর্তে এসে তা নষ্ট করে দেয় এই ঘূর্ণিঝড় মহাসেন। পটুয়াখালী অঞ্চলের শত শত কৃষকের এখন শুধুই হাহাকার।
বাড়ি গলাচিপা উপজেলার রতনদি তালতলী ইউনিয়নের মানিক চাঁদকাঠি গ্রামের আবদুল জলিল হাওলাদার একজন প্রান্তিক কৃষক।। প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে প্রতিবছর রবিশস্যের চাষবাস করেন। আর ওই জমির ফসল বিক্রি করেই চলে তাঁর প্রায় তিন মাসের সংসার খরচ। এবারও ওই জমিতে বুনেছেন চিনাবাদাম, মরিচ ও ডাল। কিন্তু সেই ফসল ঘরে তুলতে পারেননি। তাঁর ফসলের ক্ষেত ডুবে আছে পানিতে। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আবদুল জলিল। ঘূর্ণিঝড়ের পরের দিন শুক্রবার সকালেই স্ত্রী জাহানারা বেগম ও নাতনি তামান্নাকে নিয়ে নেমে পড়েন ক্ষেতে। কখনো পানি সেচছিলেন, কখনো ফসল খাড়া করে দিচ্ছিলেন পানির ওপর। আর কত চেষ্টা করবেন তিনি। কারণ তার ফসল যেভাবে তলিয়ে গেছে তা আর উঠে দাঁড়াবার নয়।
এমন আরও উপকূলীয় জেলাগুলোর হাজারো কৃষকের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের আঘাতে। বৃহস্পতিবার ভারি বর্ষণ ঘটিয়ে পটুয়াখালী খেপুপাড়া হয়ে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে মহাসেন। দুর্বল হলেও প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষতির চিহ্ন রেখে গেছে এ অঞ্চলে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের কারণে বরিশাল বিভাগের ১১টি কৃষি অঞ্চলে এক লাখ হেক্টরের বেশি জমির ফসল আংশিক বা পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আউশ ধানের জমির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। প্রায় ৫৭ হাজার ৭৪৬ হেক্টর জমির আউশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে আউশ ধানের বীজতলা, মুগডাল, মরিচ, শাকসবজি, চিনাবাদাম ও মিষ্টি আলু। দু-এক দিনের মধ্যে পানি না সরলে এসব ফসল পুরোপুরি বিনষ্ট হবে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক খোন্দকার সিরাজুল করিম।
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র বরিশালের ১১টি কৃষি অঞ্চলে আউশ ধান ছাড়াও বীজতলা আট হাজার ৬২২ হেক্টর, মুগডালের ৩৫ হাজার ৪৫৩ হেক্টর, মরিচ তিন হাজার ৫৬৭ হেক্টর, শাকসবজির ১০ হাজার ৮১২ হেক্টর, চিনাবাদামের সাত হাজার হেক্টর এবং মিষ্টি আলুর পাঁচ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে।
অপর দিকে ভোলায় ৪৫ হাজার হেক্টর, পিরোজপুরে ৯৯৬ হেক্টর, বরিশালে ৯১০ হেক্টর, ঝালকাঠিতে দুই হাজার ৩০৫ হেক্টর, পটুয়াখালীতে ৮৩৫ হেক্টর ও গোপালগঞ্জে ২০০ হেক্টর জমির আউশ ধান পানির নিচে রয়েছে। বরগুনায় ২০ হাজার ২০০ হেক্টর জমির আউশের বীজতলা তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া বরিশালে ১০০ হেক্টর, পিরোজপুরে ৯২৫ হেক্টর, ঝালকাঠিতে এক হাজার ৩৭৭ হেক্টর ও পটুয়াখালীর চার হাজার ৬০ হেক্টর জমির বীজতলা পানির নিচে। পটুয়াখালীতে ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করা মুগডাল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বরিশালে দুই হাজার ৮০৮ হেক্টর, বরগুনায় তিন হাজার হেক্টর, ভোলায় পাঁচ হাজার ৬০০ হেক্টর ও গোপালগঞ্জে ৩৫ হেক্টর জমির মুগডাল পানির নিচে। ভোলায় তিন হাজার ১০০ হেক্টর, বরিশালে দুই হাজার ৩১২ হেক্টর, পিরোজপুরে ৬৫০ হেক্টর, ঝালকাঠিতে এক হাজার ২০০ হেক্টর, পটুয়াখালীতে দুই হাজার হেক্টর, বরগুনায় এক হাজার হেক্টর ও গোপালগঞ্জে ৫০০ হেক্টর জমির শাকসবজি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তলিয়ে গেছে। পটুয়াখালীতে ১৩ হাজার ২০০ হেক্টর, বরিশালে দুই হাজার ১৭ হেক্টর, ঝালকাঠিতে ৭১৫ হেক্টর, বরগুনায় এক হাজার ৮০০ হেক্টর, ভোলায় ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর ও গোপালগঞ্জের ৩৫ হেক্টর জমির মরিচ ডুবে গেছে। চিনাবাদাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে ভোলায় ছয় হাজার ৫০০ হেক্টর ও বরগুনায় ৫০০ হেক্টর জমির। পটুয়াখালী, ভোলা ও বরগুনায় যথাক্রমে দুই হাজার ৫০০, দুই হাজার ৪৮৫ ও ৬৮০ হেক্টর জমির মিষ্টি আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়।
উপজেলার কয়েক হাজার হেক্টর পাকা-আধাপাকা বোরো ধান ও ভুট্টা পানিতে তলিয়ে গেছে।
যে কৃষকরা এখন ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত হবেন- সেখানে এখন তারা মাথায় হাত দিয়ে চিন্তিত কিভাবে আবার তারা উঠে দাঁড়াবেন। কিভাবে তারা তাদের এই ক্ষতি পোষাবেন। তথ্যসূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ।
This post was last modified on মে ১৮, ২০১৩ 6:32 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…