দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে গুলি করা আর মহাশূন্যে গুলি করার মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন হলো, মহাশূন্যে গুলি করলে কী ধরনের অদ্ভুদ ঘটনা ঘটবে?
পৃথিবীতে গুলি করা ও মহাশূন্যে গুলি করার পর প্রথম যে পার্থক্যটি পরিলক্ষিত হবে সেটি হলো শব্দে। পৃথিবীতে গুলি করলে তা বেশ জোরালো একটা শব্দও তৈরি করে। কিন্তু মহাশূন্যে গুলির কোনো শব্দ পাওয়া যায় না। শুধু এখানেই সব শেষ না। মহাশূন্যে যিনি বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দেবেন, তাকে অদ্ভুত এক পরিস্থিতির মুখেও পড়তে হবে।
নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র মতে, বন্দুক তাক করে গুলি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্দুক হতে গুলি বের হওয়ার বিপরীত প্রতিক্রিয়ায়, অর্থাৎ যিনি গুলি ছুড়েছেন তিনি ঠিক উল্টো দিকে ছিটকে পড়বেন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, এই ছিটকে যাওয়ার গতি কতোটা হতে পারে?
এমন একটি বন্দুক ব্যবহার করা হলো, গুলি বের হওয়ার গতি ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার ৬শ মাইল। তাই মহাশূন্যে এই বন্দুক হতে গুলি ছোড়ার পর, যিনি গুলি ছুড়বেন তাকে ঘণ্টায় প্রায় ০.০৬৮ মাইল গতিবেগে উল্টো দিকে ছিটকে পড়তে হবে।
অপরদিকে, এমন একটি বন্দুক ব্যবহার করা হলো, যার থেকে বের হওয়া গুলির গতি হবে ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার ৩৩০ মাইল। অর্থাৎ, এটির গুলির গতিবেগ আগের বন্দুকটির গুলির বেগের চেয়ে কম। তবে দ্বিতীয় বন্দুকের বুলেটের ওজন প্রথম বন্দুকের বুলেটের ওজনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।
যে কারণে দ্বিতীয় পিস্তল হতে গুলি ছুড়লে, প্রথম বন্দুক হতে গুলি ছোড়ার দ্বিগুণ গতিতে উল্টো দিকে ছিটকে যেতে হবে- সেটিই স্বাভাবিক। সেই গতি হবে ঘণ্টায় ০.১৩৬ মাইল; যা আধাঘণ্টায় একটি ফুটবল স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণের জন্যই যথেষ্ট।
তবে যে অস্ত্রই ব্যবহার করা হোক না কেনো, মহাশূন্যে নিশানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ শেষ পর্যন্ত সামনের দিকে ছোড়া গুলি উল্টো পথে ঘুরে নিজের পিঠেও বিদ্ধ হতে পারে। মহাশূন্যে যেহেতু কোনো প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেই, তাই কোনো একটা গ্রহের কক্ষপথ ঘুরে যিনি গুলি ছুড়েছেন তার পিঠেই গুলিটি বিদ্ধ হতে খুব বেশি সময় নাও লাগতে পারে!