দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘূর্ণিঝড় মহাসেন আঘাত হানার পর সেখানকার মানুষগুলো এখনও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সেখানে সরকারি সাহায্যের এক হিসেবে দেখা যায়, গড় সাহায্য এসেছে জনপ্রতি ১ টাকা ৭৯ পয়সা!
মহাসেন ৪ দিন আগে আঘাত হানলেও এখনও স্বাভাবিক হয়নি সমুদ্র উপকূলীয় কলাপাড়ার মানুষের জীবনযাত্রা। হাজার হাজার পরিবার দুর্বিষহ জীবনযাপন করলেও পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছেনি এখানে। সরকারিভাবে উপজেলায় ৫ হাজার ২৪৮ পরিবার সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ৩৩ হাজার ৭৭০ পরিবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব পরিবারের মানুষের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ৭০ হাজার টাকা। এ হিসাবে পরিবারপ্রতি বরাদ্দ হয়েছে ১ টাকা ৭৯ পয়সা। এ ছাড়া ৭০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হলেও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এখনও পৌঁছেনি। তথ্যসূত্র: দৈনিক সমকাল।
অপর দিকে সাগরপাড়ের কুয়াকাটা পৌরসভা ও আশপাশের ৪ ইউনিয়নের অন্তত ১৮শ’ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ত্রাণ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
কলাপাড়ার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাজার হাজার পরিবার খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন করছে। মাইলের পর মাইল রাস্তা ভাঙা গাছ পড়ে বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ। ফসলি জমির ক্ষেত এখনও ৩-৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাদাম, মরিচ, শাকসবজি, আউশের ক্ষেত। ফসলের এই ব্যাপক ক্ষতি অত্র এলাকার কৃষকদের বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
এদিকে লালুয়া ইউনিয়নের রামনাবাদ নদীর ভাঙন ও মহাসেনের তাণ্ডবে ৩ হাজার ৩৩৪টি পরিবার এখন নিঃস্ব। সরকারিভাবে এখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র সাড়ে পাঁচ টন চাল। আরও ক্ষতিগ্রস্ত লালুয়া, চম্পাপুর, ধানখালী, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অভিযোগ, মেম্বার-চেয়ারম্যানরা এলাকায় না গিয়ে ঘরে বসে নিজেদের ইচ্ছামতো ক্ষয়ক্ষতির হিসাব অফিসে পাঠাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বিশ্বাস সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাতে তার ইউনিয়নে মাত্র সাড়ে পাঁচশ’ মানুষকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা যাবে। অথচ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অন্তত এক হাজার।
অপরদিকে নীলগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, তার ইউনিয়নে পাঁচ হাজার ৮শ’ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও রোববার সকালে মাত্র সাড়ে পাঁচ টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। ২০ কেজি করে মাত্র ২৭৫ পরিবারকে এ চাল দিতে পারবেন। এ কারণে গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ত্রাণের জন্য বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার ভূমি মো. মাহবুবুর রহমান জানান, মহাসেনের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তালিকা করা শেষ হয়েছে। প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ দেওয়া হবে।
কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন নিশ্চিত করেছে, কুয়াকাটা পৌরসভা ও পার্শ্ববর্তী ৪ ইউনিয়নে আংশিক ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭ হাজার ২৫৫ পরিবার। তালিকার মধ্যে ছিল কুয়াকাটা পৌরসভার ১৮১৫ পরিবার, লতাচাপলী ইউনিয়নে ৬ হাজার ৫শ’ পরিবার, মহিপুর ইউনিয়নে ৩ হাজার ৬শ’ পরিবার, ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নে ২ হাজার ২শ’ পরিবার, ধুলাসার ইউনিয়নে ৩ হাজার ১৪০ পরিবার । ত্রাণের আওতায় এসেছে ১৮শ’ পরিবার।
কুয়াকাটা পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌরসভায় মহাসেনের আঘাতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ১৮১৫ পরিবার। উপজেলা প্রশাসন ৫শ’ কেজি চাল দেওয়ায় শনিবার রাতে এদের মধ্য থেকে ৫০ পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। পৌর কাউন্সিলর মো. তেফায়েল আহম্মেদ তপু বলেন, আমার ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ১৭০ জনের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল মাত্র ৫ জনকে দিতে পেরেছি। লতাচাপলী ইনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোসা. সাহিদা বেগম বলেন, ইউনিয়নে ৬ হাজার ৫শ’ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। প্রথম দফায় শনিবার দেড় টন চাল বরাদ্দ পেয়ে বিতরণ করা হয়নি। কারণ হিসেবে জানানো হয়, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যানুপাতে এটি বিতরণ করতে গেলে ঝামেলায় পড়তে হবে।
এই যদি প্রকৃত অবস্থা হয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে কে দাঁড়াবে। ঘূর্ণিঝড় মহাসেন আগমন বার্তায় সরকার যতখানি উদ্যোগী হয়েছিলেন -এখন পূনর্বাসন ক্ষেত্রে সে উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।
This post was last modified on মে ২০, ২০১৩ 10:22 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…