দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৎস্যকন্যার কাহিনী আমরা সিনেমায় অনেক দেখেছি। কিন্তু বাস্তবে কী কখনও মৎস্যকন্যা হতে পারে? তবে এবার কিন্তু তাই হয়েছে। আজ এমনই এক গল্প রয়েছে!
কিন্ডারগার্টেনে পড়ার সময় ছোটবেলায় স্কুলের শিক্ষককে বড় হয়ে মৎস্যকন্যা হতে চান বলে জানিয়েছিলেন কেইটলিন নিলসেন নামে এক মার্কিন নাগরিক। তার সেই কথা শুনে ক্লাসের অন্য বাচ্চারা হেসেছিল হো হো করে!
তবে ছোটবেলার সেই ঘটনার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে জীবনের ৩২ বছর বয়সে এসে নিলসেন তাঁর সেই স্বপ্ন সত্যি করেছেন। বর্তমানে নিলসেন একটি গোপন সংগঠনের সদস্য। যাদের কাজ হলো নিজেদের আধা মানুষ, আধা মাছ বলে মনে করা! এরা নিজেদের ‘মারফোক’ বলে সম্বোধন করে থাকেন!
সে তার গল্পে বলেছে, খুব ছোটবেলায় ডিজনির ছবি লিটল মারমেইড দেখার পর হতেই মৎস্যকন্যা হওয়ার শখ জাগে নিলসেনের মধ্যে। এরপর সবসময় মৎস্যকন্যা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন নিলসেন।
মৎস্যকন্যার জীবন পাওয়ার জন্য সিলিকনের লেজ তৈরি করে দেন গোপন সংগঠনটির সদস্যরা। অবশ্য তাদের কাছে এটা লেজের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ভাষায়, এটি তাদের জীবনেরই একটি অংশ।
মৎস্যকন্যা হওয়া প্রসঙ্গে নিলসন বলেছেন, ‘আমার সব সময়ই মনে হয়, আমি যেনো ত্রুটি নিয়ে জন্মেছি, সেই ত্রুটি হলো আমার পা জোড়া। যখন লেজ খুলে ফেলি তখনই বরং অদ্ভুত অনুভূতি হয় আমার মধ্যে। হঠাৎ করে দুটো পা এসে পড়ে, যাদের আমি কখনই চাই না। নিজেকে তখন খুব কদাকার মনে হয়।’
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গোটা যুক্তরাষ্ট্রজুড়েই ‘মার’ হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেওয়া এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এরা সকলেই দিনের বেশির ভাগ সময় লেজ পরে থাকতে ভালোবাসেন বা পছন্দ করেন।
জানা যায়, সিলিকনের এই লেজ তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় এক বছর। এতে খরচ হয় সাড়ে তিন হাজার ডলারেরও বেশি অর্থ। এই লেজ পরেই সুইমিংপুল কিংবা সাগরের পানিতে সাঁতার কাটেন ‘মার’রা!
এসব মারে’দের দাবি হলো, যখনই তাদের লেজ পানি স্পর্শ করে, ঠিক তখনই তারা একধরনের আত্মবিশ্বাস অনুভব করেন। দারুণ এক ভালো লাগায় ভরে ওঠে তাদের মন।
একজন পুরুষ ‘মার’ জানালেন, মার হিসেবে জীবনযাপন করার সবচেয়ে দারুণ ও মজার বিষয় হলো, এর মাধ্যমে নিজের স্বপ্নকে সত্যি করা সম্ভব। স্বপ্নে যেমনিভাবে বাঁচতে ইচ্ছা হয়, সেটাকেই বাস্তবে রূপ দেওয়া যায় ঠিক এমনটিভাবে।
নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিজেরা যুক্ত থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের এই মার’রা । এর মাধ্যমেই পরবর্তী কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করেন তারা। শুধু নারীরাই নন, অনেক পুরুষও রয়েছেন এই দলে! এই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার জন্য ‘মার’ জগতে পৃথক পৃথক নামও থাকে।
গত বছর বিশ্বের শতাধিক ‘মার’ নর্থ ক্যারোলাইনার গ্রিনসবোরে মিলিত হন। যেটি ছিল মূলত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মার ম্যানিয়া সম্মেলন! সেখানে তারা বিশাল একটি সুইমিং পুলে সাঁতার কেটে সময় কাটান। এভাবেই আনন্দের সঙ্গে মৎস্যকুমার কিংবা মৎস্যকন্যার জীবন কাটিয়ে চলেছেন বিশ্বের অনেক নর-নারী। গোপন সংগঠনের ছায়ায় হলেও নিজেদের স্বপ্নকে সত্যি করে বাঁচার চেষ্টা করছেন এরা। অনেকেই বলেন, তাহলে কী এরা এভাবেই সত্যিকারের মৎস্যকন্যায় রূপান্তরিত হয়ে জীবন কাটাবেন?