দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের বীরভূমের আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম কোরাপাড়া গ্রাম এখন পুরুষশূন্য গ্রামে পরিণত হয়েছে! কিন্তু কেনো?
বীরভূমের সিউড়ি হতে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে হলো নগরী ব্লক। সেখানেই এই আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম কোরাপাড়া। মাত্র পঞ্চাশটি পরিবারের বসবাস এই গ্রামটিতে। বিগত ৫ বছর ধরে হু হু করে বেড়েছে মৃত্যুহার। যুবক, মধ্যবয়স্ক এবং বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। বর্তমানে যারা বেঁচে আছেন তাদেরও সিংহভাগ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। অনেক মহিলাও মারা গেছেন। ঘরে ঘরে অনাথ শিশু, কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা এখন অনেক।
যক্ষ্মার অন্যতম শর্ত হলো অপুষ্টি। বীরভূমের কোরাপাড়াও এর ব্যতিক্রম নয়। গ্রামের কোনও পরিবারের হাতেই কাজ নেই, তারা বেকার। প্রত্যেকেই দারিদ্রসীমার বহু নীচে বসবাস। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া গ্রামে চাষ-আবাদের কোনো বালাই নেই। কাজ বলতে কেবল সিউড়ি শহরে গিয়ে দিনমজুর খাটা। একশো দিনের কাজের সুফলও এখানে পৌঁছায় না।
রোজগারের অভাবের ফাঁক দিয়েই ঢুকেছে যক্ষ্মার ঘুনপোকা। তারপর যুক্ত হয়েছে নতুন এক উপসর্গ, নেশা। পাঁচটা আদিবাসী গ্রামের মতো এখানেও পুজো পার্বণে হাঁড়িয়া খাওয়া চলছিল। পাঁচ বছর পূর্বে এলো চোলাই মদ। বুকে যক্ষ্মা, পেটে চোলাই মদ। অশক্ত শরীরগুলির সেরে ওঠার শেষ আশাটিও নিভিয়ে দিয়েছে অসাধু এইসব মদের ব্যবসা। গ্রাম হতে একটু দূরেই চোলাই মদের ঢালাও কারবার চলছে!
মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রাম শেষ হয়ে যাচ্ছে। সিংহভাগ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। এই যক্ষ্মাপুরীতে প্রায় সকলের জীবন প্রদীপই এখন নিভু নিভু প্রায়। সেখানে আশার আলো হলো চারটি তরতাজা প্রাণ। তাদের শরীরে প্রতিরোধ এখনও ভাঙতে পারেনি এই ক্ষয়রোধের জীবাণু। এরমধ্যে একজন ইতিমধ্যে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। তাই পুরুষশূন্য এই গ্রামটি কী আবার তার আগের রূপ কোনো দিন ফিরে পাবে? এই প্রশ্ন সকলের।