দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক গ্রামে নাকি ৪০ বছর ধরে বিয়ে হয় না! কিন্তু কেনো? নারী-পুরুষের নানা বৈষম্যই নাকি এর কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পুরুষের পাশাপাশি নারীও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্তমানে সমান তালে কাজ করছে। শিক্ষাতেও নারীরা এখন অনেক এগিয়ে গেছে। তারপরও নারীদের প্রতি বৈষম্য দেখা যায় অনেকক্ষেত্রে। আর সেই বৈষম্যের প্রমাণ হিসেবে সামনে উঠে এলো-ভারতের একটি গ্রাম, যে গ্রামে ৪০ বছরে কোনো বিয়ে হয় না।
ভারতে পুত্রসন্তান অনুপাতে কন্যাসন্তানের সংখ্যা যথাযথ রাখার জন্য একটি আইন করে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ বন্ধ করা হয়েছে। তবে তাও গোপনে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ ও কন্যাভ্রূণ হত্যার বিষয়টি রয়েই গেছে। এইভাবে কন্যাভ্রূণ হত্যা ও কন্যাসন্তানের প্রতি বিরূপ আচরণের পরিণামে সম্প্রতি সংবাদের শিরোনাম হয়েছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের গুমারানামেএক টি গ্রাম। এই গ্রামে ৪০ বছর পর কোনও বিয়ের আসর বসতে চলেছে এ বছর (২০১৭)-র ডিসেম্বরে!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, গুমারা গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই মেয়েদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করা হয়ে থাকে। মেয়েকে বিয়ে দেওয়া মানেই মোটা অঙ্কের যৌতুকের ধকল। সেই কারণে গর্ভে কন্যাসন্তান আসলে, গর্ভেই মেরে ফেলা হয়, অথবা জন্মের পরে তাকে হত্যা করা হয়। এটাই এই অঞ্চলের রীতিতে পরিণত হয়েছে। এই নৃশংসতা নিয়ে কখনও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও অভিযোগও জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি কেও।
কন্যাসন্তান জন্মের পর তামাক এবং দুধ দিয়ে তাকে হত্যা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে এই গ্রামে। যে কারণে দীর্ঘ ৪০ বছরে গ্রামের কোনও মেয়ে বিয়ের বয়সে পৌঁছায়নি। গ্রামের ছেলেরা পাত্রীর গ্রামে গিয়ে বিয়ে-সাদি করেছে! তাই প্রায় ৪০ বছর হয়ে গেলো, গুমারা গ্রামে বসেনি কোনও বিয়ের আসর।
তবে এবার ১৮ বছর বয়সি গ্রামের মেয়ে আরতি গুজার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছে এ বছরের ডিসেম্বর মাসে। ওই সময়েই গ্রামের আরেক মেয়ে রচনা গুজারেরও বিয়ের কথা শোনা গেছে।
এই বিয়ে নিয়ে মহিলারা বেশ খুশি হলেও প্রবীণরা অবশ্য বিয়ে নিয়ে মোটেও উৎসাহিত নয়। কেনোনা গ্রামের বদনাম করার জন্য তাদের গ্রামের ‘গুপ্ত’ খবর কেও সংবাদমাধ্যমের কানে তুলেছে বলে তারা দাবি করেছেন। এজন্য তারা ক্ষিপ্ত। তবে সবাই অপেক্ষায় রয়েছে বিয়ে দেখার জন্য। আগামী ডিসেম্বরে সত্যিই বসবে এই গ্রামে বিয়ের আসর? এ প্রশ্ন সবার মনে।