দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থিত ফুলার রোডের উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ মাহবুবা নাসরিন কল্পনা শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে অর্ধশতাধিক ছাত্রীর স্কুল ড্রেসের জামার ফুলহাতার অর্ধেকটা কেটে দিয়েছেন। এমনকি পরবর্তীতে জামা কোমর পর্যন্ত কেটে দিব – এই ধরণেরও হুমকি দিয়েছেন।
স্কুলটির প্রসপেক্টাসে বলা হয়েছে গ্রীষ্মকালীন সময়ে ছাত্রীদের হাফ হাতা জামা পরে আসতে হবে। কিন্তু, ছাত্রীরা ফুল হাতা জামা পরে আসতে পারবে কি না, কিংবা ফুল হাতা জামা পরে উপস্থিত হলে কোনো শাস্তির বিধান আছে কি না – এই ব্যাপারে প্রসপেক্টাসে কিছু বলা নাই। যাই হোক, গত ১৪ মার্চ একটি নোটিশে বলা হয়েছিল, সকল শিক্ষার্থীরা যেন নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরে ক্লাসে উপস্থিত হয়। কিন্তু তারপরেও বেশ কিছু ছাত্রীরা ফুল হাতা জামা পরে ক্লাসে উপস্থিত হয়।
গতকাল বুধবার সকাল ১০ টার দিকে উদয়ন স্কুলের ভাইস-প্রিন্সিপাল মাহবুবা নাসরিন কল্পনা কয়েকজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাসরুমে যান। এসময় তিনি যেসকল ছাত্রীর জামার হাতা বড় ছিলো, তাদের সকলের জামার হাতা ক্লাসে উপস্থিত সবার সামনেই কেটে দেন। উপাধ্যক্ষ কল্পনার কাছে ছাত্রীরা কাকুতি-মিনতি করে বলেছিল, “ম্যাম, এটা আমাদের ধর্মীয় রীতি, তাই পর্দা করেছি।” অথচ তাদের এমন কথার প্রেক্ষিতে উপাধ্যক্ষ উত্তর দেন, “পর্দা নয়, স্কুলের নিয়ম আগে।” শুধু তাই নয়, তিনি আরও বলেন, “আজকে শুধু হাফ হাতা করে কেটে দিলাম। এরপর কেউ কোয়ার্টার হাতা কিংবা ফুল হাতা জামা পরে আসলে, বাহুমূল পর্যন্ত হাতা কেটে দিবো।”
এদিকে স্কুলের অধ্যক্ষ ড. উম্মে সালেমা বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার নির্দেশে ছাত্রীদের জামার হাতা কেটে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এর আগে আমি তাদের অনেকবার নিষেধ করেছি ফুল হাতা পরে স্কুলে না আসতে। কিন্তু তারা তা মানেনি। তাই উপাধ্যক্ষ কাঁচি দিয়ে ফুল হাতা কেটে (হাফ হাত করে) দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, স্কুলের নিয়ম অনুসারে সবাইকে ড্রেস পরে স্কুলে আসতে হবে। এর বাইরে মেনে নেয়া হবে না। তবে কেউ যদি পর্দার কারণে ফুলহাতা শার্ট ও হিজাব পরে, তবে লিখিতভাবে তা জানাতে হবে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রীদের স্কুল ড্রেসের ফুল হাতা কেটে দেওয়ায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। অভিভাবক আব্দুল আলিম মিয়া বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ আগে কোনো ধরণের নোটিশ বা নির্দেশনা না দিয়ে এ কাজ করেছে। এ রকম স্বেচ্ছাচারি সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যায় না। শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় কারণে হিজাব বা ফুলহাতা পরে আসতেই পারে। বাংলাদেশে এ ধরনের পোশাক নিষিদ্ধ নয়।
অভিভাবকরা আরও জানান, হাতা কেটে দেয়ার সময় অনেক ছাত্রীরাই আঘাত পেয়েছে। এ ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার কারণে তারা ভয় পেয়েছে ও কান্নাকাটিও করেছে। অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাহবুবা নাসরিন কল্পনা সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর স্ত্রী।স্কুলের গভর্নিং বডির কয়েকজন সদস্য বলেন, কল্পনা প্রভাবশালী মন্ত্রীর স্ত্রী হওয়ার কারণে স্কুলে যাচ্ছেতাই আচরণ করছেন। আর তার এসব আচরণের প্রতিবাদ করলেই তিনি নানা ভয়ভীতি দেখান।
এ ঘটনার পর থেকেই অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে অভিভাবকরা স্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, আমরা স্কুলের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করছি। ওদিকে এ বিষয়ে মাহবুবা নাসরিন কল্পনার সাথে গতকাল বিকেল থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্রঃ দৈনিক ইনকিলাব
This post was last modified on মে ২৩, ২০১৩ 7:20 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ ঘুমনোর সময় ত্বক ‘হিল’ হয়। তাই রাতের স্কিন কেয়ারের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ের লেজেন্ডারি ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান মোবাইল…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যাদের শীত বেশি অর্থাৎ যারা শীতে একটুতেই কাতর হয়ে পড়েন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শাহরুখ খান এবং গৌরী খানের ৩৩ বছরের দাম্পত্য জীবনে ধর্ম…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গত বছরের ডিসেম্বরের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘নেচার ইজ় ব্রুটাল’ নামে এক্স হ্যান্ডল হতে পোস্ট করা ভিডিওটি…