দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে আন্টার্কটিকার জমাট ঠাণ্ডার মধ্যেও কীভাবে একটি জলপ্রপাতের উদ্ভব তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে অনুসন্ধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার আন্টার্কটিকার রক্তবর্ণ জলপ্রপাতের রহস্য উন্মোচিত!
শুধু তাই নয়, জলপ্রপাতের পানির রঙ লাল হওয়ার কারণ কী সেটি নিয়েও গবেষণা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। কেও বলেছেন, লাল রঙের শ্যাওলার কারণে পানির রঙ লাল হয়েছে, আবার কেও বলেছেন অক্সিডাইজড আয়রণই এর জন্য মূলত দায়ী! আন্টার্কটিকার ম্যাক মারডো শুষ্ক উপত্যকায় পাঁচতলা সমান উঁচু ‘ব্লাড ফলস’ নামের এই জলপ্রপাতটি ১৯১১-তে আবিষ্কার করেন অস্ট্রেলিয়ার ভূতত্ত্ববিদ গ্রিফিথ টেলর। অবশেষে আন্টার্কটিকার এই অদ্ভুত জলপ্রপাতের রহস্য উদঘাটন করেছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ও কলোরাডো কলেজের এক দল গবেষক ব্লাড ফলস-এটির উৎসস্থল নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। বিজ্ঞানীদের দাবি হলো, এই জলপ্রপাতটির মূল উৎস একটি নোনা পানির হ্রদ। যেটি ৫০ লক্ষ বছর ধরে টেলর হিমবাহের নীচে চাপা পড়ে আছে। নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে বিজ্ঞানীরা রেডিও-ইকো সাউন্ডিং প্রযুক্তির সাহায্য নিযেছেন। এই প্রযুক্তির সাহায্যে হিমবাহের নীচে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ পাঠানো হয়ে থাকে। সেখান থেকে যে সিগন্যাল পাওয়া গেছে, তা বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেন যে, হিমবাহের নীচে তরল অবস্থায় থাকা এই বিশাল হ্রদের অস্তিত্ব বিদ্যমান।
তবে এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে হিমবাহের নিচে কীভাবে হ্রদের পানি তরল অবস্থায় থাকে? হিমবাহ বিজ্ঞানী এরিন পেতিতের ধারণা মতে, জমে বরফ হয়ে যাওয়ার পূর্বে পানি তাপ ছাড়ে। সেই তাপ নোনা পানিকে জমতে দেয় না। যে কারণে ওই তাপমাত্রাতেও পানি তরল অবস্থাতে থেকে যাচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, লৌহ সমৃদ্ধ হ্রদের পানি যখন অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসছে, ঠিক তখনই সেটা লাল রঙের হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে টেলর হিমবাহের গায়ে রক্তবর্ণের মতো দাগ তৈরি হয়েছে।