দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সময়ের সাথে বদলে যাচ্ছে আমাদের ঈদ উদযাপনের রীতিনীতি। একটা সময় পরিবার ও পরিচিতদের সাথে সময় কাটানো ছিল আমাদের ঈদ উদযাপনের বিশেষ অংশ। কিন্তু বর্তমানে এর পরিবর্তে ঈদের ছুটির সময়কে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বেছে নেন অনেকেই।
ঈদের ছুটির কথা মাথায় এলে এখনকার দিনে প্রথমে আমরা কিসের পরিকল্পনা করি? আপনি যদি শহরের বাসিন্দা হয়ে থাকেন, তাহলে একবারের জন্য হলেও কোথাও না কোথাও ট্যুর করার কথা আপনার মাথায় আসবে। ব্যাপারটির মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু অবশ্য নেই। সারা বছর পেশাগত চাপের কারণে পরিবারকে নিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসার সময়ই বা কোথায়?
ট্যুর করার জন্য মধ্যবিত্তরা বেছে নেন দেশের বিভিন্ন স্থান। আবার অনেকে পাড়ি জমান পাশের দেশ ভারতে। উচ্চবিত্তরা সাধারণত গিয়ে থাকেন থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে।
অনেকে আছেন যারা হয়তো ঈদে বাড়ি যাওয়ার কথা চিন্তাও করেন না সেভাবে। অনেকে আবার হয়তো দুই-এক দিন বাড়ি কাটিয়েই বেরিয়ে পড়েন ট্যুরে। পরিবার পরিজনদের সাথে সময় না কাটিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসার আমাদের যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তার পিছনে কারণ কি শুধুই সময়ের অভাব? উত্তর খুঁজতে বিবেচনায় আনতে হবে বেশি কিছু বিষয়।
আগেরকার দিনের ঈদ উদযাপনের কথা স্মরণ করা যাক। ঈদে পরিবারের সকলে মিলিত হওয়া তখন ছিল এক প্রকারের অলিখিত নিয়ম। দূর-দূরান্ত থেকে পরিবারের সদস্যরা ঈদের সময়ে মিলিত হতো গ্রামের বাড়িতে, একসাথে কাটাতো বেশ কিছু দিন। ঈদ উপলক্ষে বসতো মেলা। পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে সেখানে হাজির হতো সকলে। দীর্ঘ দিন পর পরিচিতদের সাথে দেখা হওয়ার আনন্দে মেতে উঠতো সবাই।
বর্তমানে এই রীতি যে একদম উঠে গেছে, তা বলা যায় না। কিন্তু অনেক মানুষই যে এখন আর বাড়িমুখো হয় না, একথাও সত্য। মূলত শহরবাসীদের জন্য কথাটা বেশি প্রযোজ্য। শহরে বসবাসরত অনেকেই গ্রামে না ফিরে বা আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা না করে ছুটিতে চলে যান ট্যুরে। এর একটি প্রধান কারণ হিসেবে পারিবারিক বন্ধনের অভাবের কথা উল্লেখ করতেই হয়। প্রচন্ড ব্যস্ততা, প্রযুক্তি নির্ভরতা ও আত্মকেন্দ্রিক জীবনযাপনের কারণে যে আমাদের পারিবারিক বন্ধন অনেকাংশে কমে গেছে তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
পরিবারের কারো কথা মনে হলে এখন আমরা চ্যাটিং-এ দুই একটা কথা বলেই কাজ সেরে নেই। হাতে মোবাইল থাকলেও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে আমাদের কথা বলা হয়ে ওঠে না। ঈদের ছুটি পালন করা এর থেকে খুব বেশি ব্যতিক্রম কিছু নয়। যে আত্মিক টানে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের কাছে ফিরে যেতে ইচ্ছা হয় আমাদের, সেটাতেই এখন অনেকটা ভাটা পড়েছে। ফলে ঈদের ছুটিতে ঘুরতে যাওয়াই হয়ে গেছে স্বাভাবিক।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে যে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে গত কয়েক দশকে তার প্রভাব পড়েছে আমাদের জীবনযযাত্রায়। গ্রাম ছেড়ে জীবিকার তাগিদে শহরে আসা মানুষদের সাথে আত্মীয়স্বজনদের এক প্রকার দূরত্ব তৈরি হয় স্বাভাবিকভাবেই। এছাড়া একান্নবর্তী পরিবারগুলি পরিণত হয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবারে। এসবের ফলে পারিবারিক বন্ধন সব ক্ষেত্রে আর অটুট থাকছে না।
তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে- করণীয় কি? ঈদে পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করা যেমন প্রয়োজন, তেমনভাবে মানসিক তৃপ্তির জন্য প্রয়োজন ছুটিতে কোথাও ঘুরে আসা। প্রথমে পারিবারিক বন্ধনকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। ঈদে তাই অল্প সময়ের জন্য হলেও সময় কাটান পরিবারের সদস্যদের সাথে। বেড়াতে যাওয়ার একান্ত ইচ্ছা থাকলে ঈদের পর আত্মীয়-স্বজন সবাই মিলে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন কোথাও। মূল সমাধান হচ্ছে পারিবারিক বন্ধন টিকিয়ে রাখার জন্য আপনার ইচ্ছা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা।
This post was last modified on জুন ২৮, ২০১৭ 11:25 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…