দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কেনো যেনো সাম্প্রতিক সময় চীন ভারতের সঙ্গে একগুয়েমী মনোভাব দেখাচ্ছে। বেশকিছু কর্মকাণ্ড সেটিই প্রমাণ করেছে চীন। শুধু যুদ্ধ জাহাজ প্রদর্শনই নয়, চীন সরাসরি ভারতকে হুমকিও দিয়েছে। কিন্তু এর পরিণতি আসলে কী দাড়াবে? শংকিত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলো।
এদিকে ভারত আলোচনার মাধ্যমে ডোকা লা বিতর্ক সমাধানের ইচ্ছা দেখিয়েছে। সঙ্কট মেটানোর জন্য আগামী সপ্তাহে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে সঙ্গে নিয়ে বেইজিং সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্করের। তার পূর্বেই ফের ডোকা লা ইস্যুতে ভারতকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দিয়েছে চীন!
গত রবিবার চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া বলেছে, ডোকা লা বিতর্কে আলোচনার কোন স্থান নেই। ভারত ডোকা লা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে- এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ডোকা লা বিতর্ক শুরু হওয়ার পর হতেই চীনা সংবাদ মাধ্যমে নানাভাবে ভারতকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। চীনা সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস এ বিষয়ে আরও এগিয়ে রয়েছে। সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়ার মাধ্যমেও ভারতকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে!
সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া বলেছে যে, “ডোকা লা এলাকা হতে ভারতকে অবশ্যই সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে চীন বার বার আবেদন করেছে। তবে ভারত এই আবেদন মানতে অস্বীকার করেছে।”
জিনহুয়ায় অভিযোগ করে বলেছে যে, চীনের আবেদন সম্পর্কে চোখ বুজে থাকা মাসাধিককালের অচলাবস্থা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলেই মনে হচ্চে। যে কারণে ভারত নিজেকেই আরও বিড়ম্বনায় ফেলতে চলেছে বলেও দাবি করেছে চীনা ওই সংবাদ সংস্থা।
মূলত ডোকা লা বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিন একটু একটু করে সুর চড়াচ্ছে চীন সরকার। সেখান থেকে ভারতের সেনা না সরালে চীন সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তবে এসব চীনের যাবতীয় হুমকির মুখে অবিচলই রয়েছে নয়াদিল্লি। ২০১২ সালে চীন ও ভারতের মধ্যে যে চুক্তি হয়, চীন তার শর্ত ভেঙেছে বলে অভিযোগ করছে নয়াদিল্লি।
কী ছিল ওই চুক্তির মধ্যে?
ভারত, চীন ও অন্য কোনও দেশের সীমান্ত যেখানে মিলিত হয়েছে, সেইসব এলাকায় সীমান্ত সংক্রান্ত বিতর্কের মীমাংসা সেই তিনটি দেশের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতেই করতে হবে, এমন শর্ত ছিল সেই চুক্তির মধ্যে। তবে ভারত-ভুটান-চীন সীমান্তবর্তী এলাকা ডোকা লা-য় একতরফাভাবে বেইজিং রাস্তা তৈরি করা শুরু করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
মূলত চীন যে এলাকায় রাস্তাটি তৈরি করতে চাইছিল, তা ভুটানের এলাকা বলে থিম্পু দাবি করেছে। দিল্লি সেই দাবিকে সমর্থনও করেছে। ডোকা লা-য় চীনের এই সড়ক নির্মাণ কর্মসূচি নিয়েই মূলত বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। ভারতীয় সেনা গত ১৬ জুন চীনের রাস্তা নির্মাণ আটকে দিলে দেশ দুটির মধ্যে এই তিক্ততা বাড়তে থাকে। সেই তিক্ততা বর্তমানে এক চরম আকার ধারণ করেছে। বিষয়টির শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি না হলে চীন ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধের দামামা শুরু হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে চীনের যুদ্ধ জাহাজের মহড়াসহ নানা কর্মকাণ্ড সে কথায় মনে করিয়ে দিচ্ছে সকলকে।