দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসায় সেখানকার দৃশ্যপট একেবারে পাল্টে গেছে। তাই মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য এখন যেনো এক ‘মৃত্যুপুরি’!
মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য নিয়ে অনেক ইতিহাস রয়েছে। ষোড়শ শতাব্দির ইতিহাস এখন যেনো বিলীন। এক সময় যে রাষ্ট্র মুসলমাদের ছিল, এখন সেই স্থান যেনো এক ‘মৃত্যুপুরি’।
এক কথায় বলতে গেলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মগ জনগোষ্ঠীই ইতিহাসের জঘন্যতম এক ধারা সৃষ্টি করতে চলেছে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে। জরবদখল ও নির্যাতন জুলুমের সর্বোচ্চ নজির স্থাপন করেছে মগ’রা। পাহাড়ি এই দেশটির আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বিতাড়িত করতে মরিয়া উঠে পড়ে লেগেছে মগেরা।
রোহিঙ্গাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে মিয়ানমার সরকারও এই জুলুম-নির্যাতনে সায় দিয়ে আসছে। মিয়ানমারের পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনী মগদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে রোহিঙ্গা নিধনের এক মিশনে নেমেছে। যে মিশনের অনেকটায় তারা সফলও!
গত বছরও রোহিঙ্গাদের উপর হামলা চালানো হয়। এবার ‘বিদ্রোহী সন্ত্রাসীরা’ গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের পুলিশ ফাঁড়ি ও সেনা ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ এনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ভয়ংকর নির্যাতন শুরু করে মুসলিম এই জনগোষ্ঠির ওপর। পুলিশ ও সেনাবাহিনী মিলে মুসলিম প্রধান গ্রামগুলো পুড়িয়ে দেয়। চালাতে থাকে নির্যাতন।
সেনাবাহিনী ও মগেরা রোহিঙ্গা যুবকদের নির্বিচারে হত্যা করতে শুরু করে। হত্যার শিকার হয় শিশুরাও। ধর্ষণ করে তরুণীদের গায়ে আগুন দিয়ে মারার ঘটনাও ঘটে। জবাই ও পুড়িয়ে মারা হয় নিরস্ত্র মানুষদের।
এসব নির্যাতনের প্রতিটির সঙ্গেই সম্পৃক্ত রয়েছে সেনাবাহিনী ছাড়াও বৌদ্ধ মগেরা। হত্যা, ধর্ষণ ও লুটতরাজ করে মুসলমানদের দেশত্যাগে বাধ্য করছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী এইসব উগ্রবাদীরা।
সংবাদ মাধ্যমকে সেনাবাহিনী ও মগদের নির্যাতনের ভয়ংকর বর্ণনা দিয়েছেন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারী সাবেকুন্নাহার। সাবেকুন্নাহারের বাড়ি ছিল মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের মন্ডু উপজেলার ফকিরাবাজার গ্রামে। ৩৫ বছর বয়সী সাবেকুন্নাহারের এক মেয়ে দুই ছেলে। সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে শেষ পর্যন্ত স্বামী-সন্তানকে নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ে তাবুতে ঠায় নিয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যমকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নির্যাতিতা এই নারী বলেছেন, ঈদের তিন দিন পরের ঘটনা এটি। সেদিন বিকেলে টুপি মাথায় দিয়ে বেশ কয়েকজন অপরিচিত লোকজন আমাদের গ্রামে প্রবেশ করে। ৪জন আমাদের বাড়িতেও আসে। পরে আমরা বুঝতে পারি মুসলমানের বেশ ধরে বৌদ্ধ মগরা এসেছে। এর ঠিক কিছুক্ষণ পরেই গ্রামে পড়ে যায় হৈ-চৈ । বাড়ি ঘরে আগুন জ্বলতে থাকে। চারিদিকে শুধুই গুলির শব্দ।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ও মগদের বিরুদ্ধে চরম নির্যাতনের অভিযোগ আনেন আরেক রোহিঙ্গা আরিফুর রহমান। আরিফুর আরাকান রাজ্যের তুমব্রু রাইট গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ব্যবসা করে বাড়ি-গাড়ি সবই করেছিলেন তিনি। মিয়ানমার সেনারা গত ৬ জুলাই তুমব্রু গ্রাম জ্বালিয়ে দিলে আরিফের বাড়িও পুড়ে একেবারে ছাই হয়। পুড়িয়ে দিয়েছে তার সখের প্রাইভেটকারটিও।
আরিফুর বলেছেন, মগদের এক ধর্মীয় নেতা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মুসলিম বিদ্বেষী বয়ান দেওয়ার পর হতেই মুসলমানদের উপর নির্যাতন শুরু হয়ে যায়। ওই ধর্মীয় নেতা সেনাবাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করেই সন্ত্রাস উসকে দিচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সংঘর্ষ হলেও আগে কখনও এমন নির্যাতন হয়নি বলে জানান তিনি। তিনি জানান, আগে সেনারাই এসে আমাদের রক্ষা করতো। এখন মগদের সঙ্গে সেনারাই গুলি করছে, হত্যা-নির্যাতন চালাচ্ছে। গোটা আরাকান এখন এক ভস্ম ‘মৃত্যুপুরি’তে পরিণত হয়েছে। এখন নির্যাতিতদের একমাত্র ভরসা হলো আল্লাহ। তারা এখন চেয়ে আছে জাতিসংঘ এই নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং তাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
This post was last modified on সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭ 9:41 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দিনের বেলায় ঘুমানোকে আমরা ভাত ঘুম বলে থাকি। তবে দিনের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডিপিএস এসটিএস সিনিয়র স্কুল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হয়েছে ডিপিএস এসটিএস স্কুল…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক অ্যান্ড চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৩- এর…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে ছবিটি আপনারা দেখছেন সেটি দেশের জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রীর ছোটবেলার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছবিতে লুকিয়ে রয়েছে একটি কাঁচি। তবে এই কাঁচির প্রতিকৃতিটি এই…