দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো। এই সব দেশের মধ্যে আবার অন্যতম হলো। যেমন এবার আরব আমিরাত প্রশিক্ষণের জন্য গড়ে তুলছে ‘মঙ্গল শহর’!
আরব আমিরাতে এই তোড়জোড় দেখে মনে হবে যেনো মানুষের মঙ্গলে অভিযানের এক প্রস্তুতি। কারণ মঙ্গলগ্রহ নিয়ে মানুষের আগ্রহের যেনো শেষ নেই। সেখানে মানুষ কি করতে পারে, কিভাবে বসবাস করবে সেসব বিষয়ও সকলের মধ্যেই আসছে। আর এই বিষয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি হলো, মঙ্গলগ্রহে পৌঁছানোর পরপরই সেখানে মানুষের জীবন-যাপন কেমন হবে, ইউনাইটেড আরব আমিরাত মঙ্গলের মতো একটি পরিবেশের অনুরূপ পৃথিবীতে একটি আস্ত শহর গড়ার মাধ্যমে এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি আরব আমিরাত সরকারের বার্ষিক সভায় ১৩৬ মিলিয়ন ডলার খরচে নির্মিতব্য এই শহরের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই শহরটির নাম দেওয়া হবে মার্স সায়েন্টিফিক সিটি (Mars Scientific City)। জানানো হয়েছে, এটি মোহাম্মদ বিন রসিদ মহাকাশ কেন্দ্রে্রই একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ। এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ২১১৭ সালের মধ্যে মঙ্গলগ্রহে একটি মানব বসতি স্থাপন করা।
জানা গেছে, ড্যানিশ স্থপতি জার্ক ইঙ্গলেস আমিরাতের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে নিয়ে এই মঙ্গল শহরের নকশার কাজ করেছেন। এরমধ্যে আছে একশ্রেণীর ভবিষ্যতদর্শী ডোমআকৃতির একটি ভবন।
এটির অভ্যন্তরে বেশ কিছু গবেষণাগার থাকবে যার মাধ্যমে খাবার, শক্তি ও পানির চাহিদাপূরণের উপায় ইত্যাদি নিয়েও গবেষণা করা হবে। সেইসঙ্গে এতে একটি জাদুঘর থাকবে। যাতে করে মানবজাতির অদ্যাবধি সেরা সাফল্যগুলো তুলে ধরা হবে। এই মঙ্গল শহরটি আমিরাতের মরুভূমির বালি হতে থ্রিডি প্রিন্টিং এর মাধ্যমে তৈরি করা হবে।
জানানো হয়, এই শহরে মঙ্গলের তুলনায় বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন- মঙ্গলের মতো এখানে কোনো অক্সিজেন উৎপাদন করতে হবে না। তাছাড়া মঙ্গলের মতো এখানে বাসিন্দাদের ক্ষতিকর বিকিরণের মুখেও পড়তে হবে না। মঙ্গলে কোনো চৌম্বকত্ব নেই বলে সেখানে অতিবেগুনী রশ্মি বর্মে ঢাকার মতো ব্যবস্থাও নেই।
মঙ্গলপৃষ্ঠের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর শতকরা ৩৮ শতাংশ। গড়ে এর তাপমাত্রা পৃথিবীর তুলনায় বেশ কম। গবেষণাগারে মঙ্গলের আবহাওয়া তৈরিরও চেষ্টা করা হবে। সেখানে তাপ ও বিকিরণের সমস্যা প্রতিকার উপায়ও বের করার জন্য কাজ করা হবে। এই শহরটির পরিকল্পনায় রয়েছে একটি দল। তারা এরমধ্যে বসবাসের মাধ্যমে মঙ্গলের বিরূপ এবং প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার কৌশলও উদ্ভাবন করবেন। এভাবেই মঙ্গলের সব রকম পরিবেশ তৈরি করে অনেকটা মহড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।