দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রেমের বিষয়টি সত্যিই একটি ভিন্ন বিষয়। প্রেমের জন্য মানুষ সব কিছুই করতে পারেন। যেমন এই প্রেমিক-প্রেমিকা মুমূর্ষূ অবস্থাতেও হাসপাতালে আইসিইউতেই আংটি পরালেন!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, একদিন দু’দিন নয়, ৯ বছরের প্রেম করার পর কথা ছিলো আগামী বছরই বিয়ের পিড়িতে বসবেন তারা। তবে প্রাণঘাতী এক দুর্ঘটনা শেষ পর্যন্ত কেড়ে নিতে বসে প্রেমিকার জীবন। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন প্রেমিকা। একটুর জন্য বেঁচে যাওয়া প্রেমিকা যখন আইসিইউতে, ঠিক তখন প্রেমিকের ভালোবাসার আংটিই খুঁজে নিলো তার অনামিকা।
এমন একটি ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গুয়াহাটির অ্যাপোলো হাসপাতালে। হিমাংশু পঙ্কজ বড়ো ১৫ অক্টোবর হাসপাতালের আইসিইউতেই প্রেমিকা সঙ্গীতার সঙ্গে সেরে ফেলেন বাগদান।
জানা যায়, গুয়াহাটির কে সি দাস কমার্স কলেজে পড়ার সময় হতেই প্রেম শুরু হয় রঙিয়ার হিমাংশু এবং মির্জার সঙ্গীতার। এই ৯ বছরের প্রেমপর্ব শেষে ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিয়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। সঙ্গীতা বর্তমানে এম কম করছেন। হিমাংশু কাজ করেন একটি নির্মাণ সংস্থায়।
এই বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যই ৮ অক্টোবর গাড়ি ভাড়া করে বাবার সঙ্গে মির্জা যাচ্ছিলেন সঙ্গীতা। তবে বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। সঙ্গে সঙ্গে মারা যান চালক এবং সঙ্গীতার বাবা।
মারাত্মক আহত সঙ্গীতাকে অচেতন অবস্থায় নিয়ে আনা হয় হাসপাতালে। সেখানে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত কোমায় ছিলেন সঙ্গীতা। ১৪ তারিখে জ্ঞান ফিরলেও কোমর, হাত এবং মেরুদণ্ড ভাঙা, ফুসফুসে সংক্রমণ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়া সঙ্গীতা শেষ পর্যন্ত বাঁচবেন কিনা- তা নিয়েও শঙ্কা কাটেনি।
এরপরও পূর্বনির্ধারিত বাগদানের তারিখেই হিমাংশুর হাতে আংটি পড়তে চেয়েছেন সঙ্গীতা। প্রেমিকও তার ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেন এই দিনে আইসিইউ-এর নিয়মটা একটু পাল্টাতে হবে। হাসপাতালের লোকজনও রোগীর মানসিক অবস্থার কথা ভেবে সায় দেন এই অনুরোধের।
এরপর ১৫ অক্টোবর, ১ নম্বর বেডে শুয়ে থাকা সঙ্গীতাকে আংটি পরিয়ে দেন হিমাংশু। গায়ে তুলে দেন নতুন একটি শাড়ি। হবু বউমাকে আশীর্বাদও করেন হিমাংশুর বাবা-মা। সঙ্গীতার কপাল এবং সিঁথিতে আলতো সিঁদুর ছুঁইয়ে দেন হিমাংশু। অন্য বেডের রোগীরা এবং তাদের আত্মীয়রাও হবু বর-কনেকে আশীর্বাদ করেন। হিমাংশুর পরনে ছিল নতুন একটি পাঞ্জাবি।
আশীর্বাদের পরে নার্স, চিকিৎসক, অন্য রোগীরাও তাদের পরিবার-সহ সকলকে মিষ্টিমুখ করান হিমাংশুর পরিবার। এভাবেই ঘটে হাসপাতালের আইসিইউতে বাগদানের পর্ব।