দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পাঠ্যপুস্তকে এমন একটি কথা বা এমন একটি বিষয় থাকতে পারে তা কেও কখনও চিন্তাও করেনি। তবে সত্যিই এমন একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতে। সেখানকার একটি স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে ‘বউ থেকে গাধা ভালো’ বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে!
এটি কেবলমাত্র ভারতের মহারাষ্ট্রের পাঠ্য বইয়ে নয়, ভারতের বিভিন্ন অংশে পাঠ্য বইয়ে এমন ধরনের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মহারাষ্ট্র বোর্ডের প্রকাশ করা দ্বাদশ শ্রেণীর সমাজ বিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ের তৃতীয় অধ্যায়ে লেখা হয়েছে, ‘যদি কোনো বিবাহ যোগ্য নারী দেখতে কুৎসিত ও বিশেষভাবে সক্ষম হন, সেক্ষেত্রে তাকে বিয়ে দেওয়াটা মুশকিলের হয়ে দাঁড়ায়।
তখন পাত্রপক্ষের পক্ষ হতে পণ চাওয়া হয় এবং কন্যাপক্ষ পণ দিতে বাধ্য হন’।
সমাজের একটা কলঙ্কিত দিক নিয়ে লেখার সময় আরও যত্নবান হওয়া উচিত ছিল বলে এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন ভারতের মহারাষ্ট্রের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী বিনোদ তাবড়ে। দিল্লির বহু স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির পরিবেশ বিদ্যার বইয়ে ‘লিভিং থিং’ ও ‘নন লিভিং থিং’ বিষয়টি বোঝানো হয়। সেখানেই একটি নিশ্চিদ্র বাক্সে বিড়াল ছানাকে ঢুকিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। যতোক্ষণ না বিড়াল ছানাটি মারা যায়, ততোক্ষণ অপেক্ষা করার কথাও বলা হয় সেখানে।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান অ্যানিমেল প্রোটেকশন অর্গানাইজেশন পাঠ্যবইয়ে প্রকাশিত এমন তথ্যের বিরোধিতা করেছে। এর পরেই ধীরে ধীরে বহু স্কুল থেকে এই পাঠ্য বিষয়বস্তু সরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
মহারাষ্ট্র বোর্ড ভূগোল বইয়ের একটি মানচিত্রে অরুণাচল প্রদেশকে চীনের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছিল, যা নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। পরে বোর্ডের পক্ষ হতে এই বিষয়ে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া হয়।
২০১৪ সালে গুজরাটের সরকারি স্কুলের পাঠ্যবইয়েও ছিল এমন ধরনের বিতর্কিত কিছু তথ্য। সরকারি স্কুলের ক্লাস সেভেনের সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্য বইয়ে বলা হয়েছিল যে, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করেছিল’! এমনকি ওই একই পাঠ্য বইয়ে মহাত্মা গাঁন্ধীর মৃত্যু দিবসটিও ভুল ছাপা হয়।
রাজস্থান শিক্ষা দপ্তর হতে প্রকাশিত নবম শ্রেণীর হিন্দি পাঠ্যবইয়ে লেখা ছিল— ‘স্ত্রীর থেকে গাধারা ভালো। কারণ গাধাকে খাবার খাওয়ালে সে সারাটাদিন ধরে কাজ করে। প্রভুর কথার কোনো অবাধ্য হয় না। এমনকি কোনো অভিযোগও করে না। তবে, স্ত্রীরা তা করে থাকে।’
ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, রাজস্থানের শিক্ষা দপ্তরের পরিচালক এআর খান এই পাঠ্য বিষয়বস্তুর স্বপক্ষে যুক্তিও দেন, ‘মজাচ্ছলেই এই তুলনা টানা হয়েছিল’। পরে অবশ্য এই বিষয়টি পাঠ্যবই হতে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।