ইসলামিক স্টেটের ‘ফার্স্টলেডি’ তানিয়ার গল্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তানিয়া জর্জেলাস এবং তার স্বামী জনের জীবনকাহিনী চার মহাদেশেই বিস্তৃত। আজ রয়েছে ইসলামিক স্টেটের সেই কথিত ‘ফার্স্টলেডি’ তানিয়ার গল্প!

এটিকে বলা যায় পুরোদস্তুর একজন আমেরিকার নাগরিকের গল্প। তানিয়ার স্বামী জন ছিলেন টেক্সাসের এক ধনী খ্রিস্টান পরিবারের ছেলে। কৈশোরে জন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ১৩ বছর পর জন ইসলামিক স্টেটে যোগদান করে নিজেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তারপর লন্ডনে সে বিয়ে করে তানিয়াকে।

সম্প্রতি তানিয়াকে ‘আইএস–এর ফার্স্টলেডি’ উপাধি দিয়ে তার উপর একটি ডকুমেন্টারি প্রকাশ করেছে আমেরিকান ম্যাগাজিন দ্য আটলান্টিক।

Related Post

ওই ডকুমেন্টারিতে তানিয়া তার লন্ডনে বেড়ে উঠার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি বহুবার বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছি। প্রায়ই নিজেকে আমার কাছেই বহিরাগত মনে হতো। আমি প্রতিশোধ নেওয়ার একটা পথ খুঁজতাম।’
একটি ম্যাচমেকিং বা ঘটকালির ওয়েবসাইটে জনের সঙ্গে পরিচয় হয় তানিয়ার। জিহাদে জনের আগ্রহের সঙ্গে তানিয়ার আগ্রহও মিলে যায়।

বিয়ের পর এই দম্পতির চারটি সন্তান হয়। তারা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখতো জিহাদি একটি পরিবার হয়ে ওঠার! ২০১৩ সালে তারা সিরিয়ায় গমন করে, সিরিয়াকে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানোর উদ্দেশ্যে। তবে সেখানে শুধু জনই টিকতে পেরেছিলেন, তানিয়া টিকতে পারেননি।

দিনের পর দিন সিরিয়ায় থাকার পর তানিয়া তার মত পাল্টান। তার সন্তানদের জন্য ইসলামিক স্টেট তার কাছে ভালো মনে হয়নি। তানিয়া সিদ্ধান্ত নেন যে, টেক্সাসে জনের বাবা–মায়ের কাছে চলে যাবেন। জনকে বোঝাতে সক্ষমও হন তানিয়া। এরপর জনই তাকে তুরস্কের বর্ডারের কাছে নিয়ে যান।

আর তখন সেখান থেকেই মাইন ফিল্ডের মধ্যদিয়ে চার সন্তান নিয়ে শুরু হয় তার যাত্রাপথ। এক সময় সত্যিই স্নাইপারদের চোখ এড়িয়ে কাঁটাতারের বেড়া গলে চলে আসেন তুরস্কতে। সেখানে তিনি চলার শক্তি হারিয়ে ফেলার কারণে জনের বাবা–মা গিয়ে চার সন্তানসহ তানিয়াকে টেক্সাসে নিয়ে আসেন।

টেক্সাসে গিয়ে তানিয়া জনের মতোই আমুল বদলে যান, ঠিক উল্টো পথে। জন জিহাদের জন্য আমেরিকা ছেড়েছিলেন, আর তানিয়া আমেরিকার জন্য জিহাদ ছেড়েছেন।

তানিয়া টেক্সাসের গৃহিণী হিসেবে পুরোপুরি মানিয়ে নিয়েছেন নিজেকে। এখন তার পোশাক–আশাক দেখলে মনে হবে তিনি যেনো গত এক দশক ধরে ভোগ ম্যাগাজিনের একনিষ্ঠ পাঠিকা! তানিয়ার বর্তমান প্রেমিক মিনেসোটা রাজ্যের প্রযুক্তিবিদ।
তবে দ্য আটলান্টিকের প্রতিবেদক মন্তব্য করেছেন যে, তানিয়া কখনই সন্ত্রাসকে উৎসাহিত করেননি। তবে তিনি কিছুটা ভিন্ন মতাবলম্বী ছিলেন। যেমন ‘খিলাফত চাওয়ার জন্য একদল মানুষের ওপর বোমাবর্ষণ করা হবে কেনো’ সেটা তানিয়া বুঝতে পারেন না এখনও।

ওই প্রতিবেদকের ধারণা মতে, জন আমেরিকা ছেড়ে ইসলামিক স্টেটকে বেছে নিয়েছেন। অপর দিকে ইসলামিক স্টেট ছেড়ে বেরিয়ে আসা তানিয়াকে জায়গা দিয়েছে আমেরিকা। এভাবে অফুরন্ত সম্ভাবনাকে জিইয়ে রাখাতেই আমেরিকার বিজয় মনে করা হচ্ছে। সূত্র : দ্য আটলান্টিক

This post was last modified on নভেম্বর ১৪, ২০১৭ 1:29 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

কোমল ত্বকের রহস্য লুকিয়ে রয়েছে যে ফেসপ্যাকে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে চামড়ায় টান ধরা নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে সমস্যা…

% দিন আগে

পড়ে গেলেও ভাঙবে না এমন এক স্মার্টফোন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অসতর্কতাবশত: হাত থেকে পড়ে গেলেও ফোনের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার…

% দিন আগে

ওজন কমাতে তাড়াহুড়ো করলেই ঘটতে পারে বিপদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ওজন কমাতে গিয়ে তাড়াহুড়ো করা যাবে না, কারণ তাড়াহুড়া করলেই…

% দিন আগে

এবার আইস্ক্রিনে আসছে শাকিবের ‘দরদ’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের অন্যতম ওটিটি প্লাটফর্ম আইস্ক্রিনে স্ট্রিমিং হতে চলেছে সুপারস্টার শাকিব…

% দিন আগে

পদত্যাগপত্রে যা লিখেছেন টিউলিপ সিদ্দিক

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া, সাংবাদিককে হুমকি…

% দিন আগে

কিছুতেই ঘুম ভাঙছে না ‘অলস’ সন্তান! ছানাকে জাগিয়ে তুলতে অভিনব পন্থা নিলো মা-হাতি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাতিশালের মধ্যে ঘুমোচ্ছে পুচকে একটি বাচ্চা হাতি। শাবকের ঘুম ভাঙাতে…

% দিন আগে