দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই এমন গ্রাম খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ এমন এক গ্রামের সন্ধান পাওয়া গেছে যে গ্রামের শিশুরা ধূমপান করেন। শুধু তাই নয়, সেটি আবার খুব সাধারণ এক ব্যাপার!
ধূমপানের অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না এমন লোক বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ হলো সিগারেটের মোড়কেও লেখা থাকে, “সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর”। চিকিৎসাবিজ্ঞান মতে, ধূমপান ক্যান্সারেরও কারণ। তাই সকলকেই ধূমপান থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
তবে পৃথিবীর বুকে এমন একটি গ্রাম আছে যেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে বয়োঃজ্যেষ্ঠ্য তো অবশ্যই; আবার ধূমপান করে শিশুরাও। এমনই এক চমকপ্রদ খবর দিয়েছে এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এর উদ্বৃতি দিয়ে ইন্ডিয়া টুডে।
এটি পর্তুগালের ভেল দে সেলগুইরো গ্রাম। এই গ্রামের অধিবাসীরা নিজেরা তাদের শিশুদের ধূমপানে উৎসাহিত করে থাকেন। ৫ বছর বয়স হলেই নিজেদের সন্তানদের সিগারেটের প্যাকেট কিনে দেন এই গ্রামের অভিভাবকরা!
এই ধূমপান শুরু হয় বিশেষ এক উৎসবের মধ্যদিয়ে। এই গ্রামে বড়দিন উপলক্ষে আয়োজন করা হয় “কিংস ফিস্ট” কিংবা “রাজার ভোজনের” দিন। বড়দিনের পর বর্ষ বরণের পরের শুক্রবার শুরু হয়ে এই উৎসব চলে পরের শনিবার পর্যন্ত।
রীতি অনুযায়ী এই অনুষ্ঠানে একজনকে “রাজা” সাজানো হয়। এই রাজাই সকলের মধ্যে মদ ও খাবার তুলে দেয়।
যদিও পর্তুগালের রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সীদের নিচে ধূমপান অবৈধ। তবে এই আইন চলে না ভেল দে সেলগুইরো গ্রামটিতে। বহু প্রাচীন এই রীতির সঠিক অর্থ জানে না গ্রামবাসীরাও। তবে বংশ পরমপরায় পালন করা হচ্ছে এমন রীতি।
গ্রামের এক কফি শপের মালিক গুলহারমিনা মাতিয়াস সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, “আমি ঠিক জানি না যে কেনো আমি আমাদের সন্তানদের ধূমপান করতে দেই। আমি অবশ্য এর মধ্যে খারাপ কিছুই দেখি না, কারণ তারা ধোয়াটা মুখে নিয়েই বের করে দেয়। তারা ধূমপান করে শুধুমাত্র উৎসবের এই দুই দিন। এরপর তারা আর ধূমপান করবে না।”
এই গ্রামটি নিয়ে বিভিন্ন লেখালেখি করা জোসে রিবেইরিনহা জানান, পৌত্তলিক যুগে গ্রামবাসীরা তাদের পছন্দ মতো অনেক কিছুই করতে পারতো না। শুধু শীতকালীন উৎসব তারা তাদের খেয়াল খুশি মতো উদযাপন করতে পারতো। আর তখন সেই শীতের সময় তারা ধূমপান করতো। মূলত সেখান থেকেই উৎসবের এমন উদযাপনের সূত্রপাত বলে মনে করা হচ্ছে।