ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ গত মাসেও জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের খবর আসার পর আবারও নোয়াখালীর সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। ১৭ মার্চ দুপুর ১২টায় এই ক্ষেত্র থেকে এক কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু হয়েছে। কিন্তু বার বার গ্যাস সরবরাহ বাড়লেও চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এখন বাসা বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। নতুন সংযোগ বন্ধ থাকলেও যেসব বাসায় পূর্বের লাইন রয়েছে অর্থাৎ এক্সটেনশন প্রয়োজন সেগুলোর সংযোগও এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর এ প্রসঙ্গে জানান, এই ক্ষেত্রের একটি কূপ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে দৈনিক ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সরবরাহ বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত করা হবে। পেট্রোবাংলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স দীর্ঘ ১৫ বছর পর নতুন একটি ক্ষেত্র থেকে গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে হোসেন মনসুর বলেন, এটি আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন। তিনি জানান, গ্রিডে যোগ হওয়া নতুন গ্যাস চট্টগ্রাম অঞ্চলে দেয়া হবে, যা শিল্পকারখানাসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগবে। এখানে উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে দৈনিক ২৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে ২০০ কোটি ঘনফুট উৎপাদন হচ্ছে। সেই হিসেবে ৫০ কোটি ঘনফুট ঘাটতি থাকছে। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহজাদপুর গ্রামে সাড়ে তিন একর জমিতে নতুন এ ক্ষেত্রে অনুসন্ধান কূপ খনন শুরু হয়। এর আট মাস পর ১৭ অগাস্ট শুরু হয় পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন। এ ক্ষেত্রে ভূ-পৃষ্ঠের ১ হাজার ৪০০ মিটার নিচে গ্যাস পেয়েছে বাপেক্স। এর আগে দেশে এত কম গভীরতায় আর কোথাও উত্তোলনযোগ্য গ্যাস পাওয়া যায়নি। হবিগঞ্জ ক্ষেত্রে গ্যাস পাওয়া গেছে ভূ-পৃষ্ঠের ১ হাজার ৫০০ মিটার নিচে। সুন্দলপুর ক্ষেত্র নিয়ে দেশে মোট গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা এখন ২৪টি। নতুন কূপ থেকে উৎপাদন শুরু হওয়ায় চালু কূপের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২টিতে।
কিন্তু একের পর এক গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কৃত হলেও গ্যাসের চাহিদা দিনকে দিন এতই বাড়ছে যে, চাহিদার বিপরিতে এখনও গ্যাস ঘাটতি রয়ে গেছে। বিশেষ করে বাসা বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। তাছাড়া শিল্প-কারখানাতেও গ্যাস সরবরাহ না থাকায় দেশের উৎপাদন ক্ষেত্রে চলছে এক নাজুক পরিস্থিতি। তাই সরকারকে এ ব্যাপারে তরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।