দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কম্পিউটার গেমস চলতি দুনিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিনোদন মাধ্যমগুলোর একটি। হিসেব করলে হয়ত দেখা যাবে প্রচলিত বিনোদন মাধ্যমের বেশিরভাগকেই এরই মধ্যে টপকে গেছে কম্পিউটার গেমস। কিন্তু টিভি দেখার মতো কম্পিউটার গেমসে কেবল তাকিয়ে থাকলেই হয় না, বরং যিনি খেলছেন তার মানসিক এবং দৈহিক সম্পূর্ণ অংশগ্রহণের দরকার হয়। তাই গেমস খেলে আঙ্গুল ব্যাথা করে ফেলার ভয়ে অনেক কম্পিউটার-ক্রীড়াপ্রেমী শতভাগ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তা থেকে সরে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু প্রযুক্তি তো দিনে দিনেই মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার কম্পিউটার গেমস থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছে, হাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ। অচিরেই হাত দিয়ে নয়, মন দিয়ে খেললেই কম্পিউটার গেমসের ষোলআনা বিনোদনই পেতে যাচ্ছেন।
ব্যাপারটা একটু ধোঁয়াটে মনে হতে পারে। কিন্তু কম্পিউটার প্রযুক্তি আরও উন্নত করার জন্যে বর্তমানে একে দেহের সঙ্গে কিভাবে এক করে ফেলা যায়, বা পরিধানযোগ্য কম্পিউটার তৈরি করা যায় কিনা সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় কম্পিউটার গেমসে এই নতুন সংযোজন। আমেরিকার প্রযুক্তিপন্যের প্রতিষ্ঠান নিউরোস্কাই এমন একটি হেডসেট আনতে যাচ্ছে তা মাথায় পরলে আর হাত দিয়ে কম্পিউটার গেমস খেলার প্রয়োজন পড়বে না। ব্যবহারকারীর মস্তিষ্কের তরঙ্গ ধরতে পারবে এই হেডসেট এবং এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী গেমসে ঠিক যেই কথা মনে মনে ভাবছেন ঠিক সেই চালটিই স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেয়া হয়ে যাবে। তাইওয়ানের রাজধানী তাইপের কম্পিউটেক্স ট্রেড ফেয়ারে এই নতুন প্রযুক্তির প্রদর্শনী হয়েছে সম্প্রতি। শুধু গেমসেই নয়, নিউরোস্কাইয়ের এই মাইন্ড ওয়েভ মোবাইল কম্পিউটারের অন্যান্য অ্যাপলিকেশনেও ব্যবহার করা যাবে। সেক্ষেত্রে একটি আঙ্গুলও তুলতে হবে না আপনার কাজটি সেরে নিতে। এমনকি তাইওয়ানে অনুষ্ঠিত ওই প্রদর্শনীতে নিউরোস্কাইয়ের এক কর্মীরা মাইন্ড ওয়েভ মোবাইল পড়ে পুরোদস্তুর একটি খেলনা হেলিকপ্টারকে আকাশে উড়িয়েছেন, নিয়ন্ত্রণও করেছেন ইচ্ছেমতো। প্রায় সব ধরনের গেমসে ব্যবহার করা গেলেও আমেরিকার সিলিকন-ভ্যালী ভিত্তিক কোম্পানিটি প্রধানত মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর গেমসগুলোয় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যবহার করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কোম্পানিটির প্রতিনিধির দেয়া তথ্য অনুযায়ী মালয়েশিয়া এরই মধ্যে তাদের অনেক স্কুলে এই মস্তিষ্ক তরঙ্গ-ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা শুরু করেছে।
নিউরোস্কাইয়ের তাইওয়ান প্রতিনিধির ব্যাখা অনুযায়ী, মাইন্ড ওয়েভ মোবাইলের কাজের পেছনের প্রযুক্তিটি কিন্ত অনেক সরল। মাইন্ড ওয়েভ মোবাইলের ভেতরে থাকা একটি চিপ মস্তিষ্কের তরঙ্গটি ধরে এবং মস্তিষ্কের তরঙ্গের তথ্যটি ব্লু-টুথ প্রযুক্তিতে পাঠিয়ে দেয় কম্পিউটারে, খেলনায় বা নিয়ন্ত্রণাধীন ডিভাইসটিতে।
তথ্যসূত্র: দি টাইমস অব ইনডিয়া