দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিঙে (Drongo) Passeriformes বর্গের Corvidae গোত্রের গায়ক পাখি। মাঝারি আকার, উজ্জ্বল কালো রং, লম্বা ও চোখা ডানা, সামান্য বাঁকা শক্ত ঠোঁট যার গোড়ায় লম্বা গোঁফ, দীর্ঘ ও খাঁজকাটা লেজ এদের বৈশিষ্ট্য।
ছবি-রবিন রাজ
আফ্রিকা, প্রাচ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় দেখা গেলেও দক্ষিণ এশিয়ায় এই গোত্রের প্রাধান্য লক্ষণীয়। ফিঙে প্রায়শ নিজের চেয়ে অনেক বড় পাখিকেও তাড়া করে এবং অনেক সময় প্রতিবেশী নিরীহ পাখিদের আগ্রাসী শিকারি পাখির হামলা থেকে বাঁচায়। প্রধানত পতঙ্গভুক, উড়ন্ত কীটপতঙ্গ ধরে খায়, আবার কখনও ছোটখাটো মেরুদন্ডী খায়। পৃথিবীতে প্রায় ২৪ প্রজাতি আছে, বাংলাদেশে আছে ৬ প্রজাতি।
আমি আবার ড্রোংগো/ ফিঙ্গের ছবি তুলতে খুবই পছন্দ করি। ৬ প্রজাতির ফিঙ্গে সাধারণত এদেশে দেখা যায়। আমরা সব সময় যে ফিঙে দেখি সেটা হল কালা-ফিঙে, ব্রোঞ্জ-ফিঙে। মেটে ফিঙেরো দেখা মিললেও। কেশরী- ফিঙে, র্যাকেট Racket ফিঙে খুব একটা দেখা মেলে না বছরের নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট বাগান বা বনে এর দেখা মেলে।
Lesser racket-tailed Drongo/ছোট-র্যাকেট ফিঙে ঃ
ছবি-রবিন রাজ
এ বছরে আমরা একটা ফিঙে আবিষ্কার করেছি যা বাংলাদেশে প্রথম দেখা গিয়েছে। তাই রাজশাহীর বার্ডাররা এবার ফিঙের ভালো সময় বলে আখ্যায়িত করছেন। আর প্রবীণ পাখি বিষারদ গণ ও মনে করছেন এবার প্রায় সব ধরনের ফিঙে দেখা যেতে পারে।
রাজশাহীতে এই পাখিটি পাওয়া ছিল আমার জন্য খুবই আনন্দের বিষয়। বগুড়া বা দিনাজপুরে এর দেখা মিলেছে অনেক আগেই,তবে রাজশাহীতে এর দেখা মেলা ছিল একটা স্বপ্ন সত্যির মত ঘটনা। রাজশাহীর ভার্সিটির দেবদারু, আম, অর্জুন বাগানে এই সিজনে খেলে বেড়াচ্ছে এই সুন্দর র্যাকেট ফিঙে। ফিঙে খুব টেরিটিয়াল পাখি হয়, এর সীমানায় অন্য পাখির উপস্থিতি একদম পছন্দ করে না আর যদি সেটা প্রজননের সময় হয় তাহলে তো কথাই নেই।
যাইহোক একদিন racket tail এর ছবি তুলবো বলে একদিন উপস্থিত হলাম স্পটে, যেয়ে দেখি আগে থেকেই সতীর্থরা উপস্থিত এবং তারাও কোন একটা কিছুকে লক্ষ্য করে এ গাছ ও গাছ করে বেড়াচ্ছে। আমিও আমার ক্যামেরা গিয়ার্স প্রস্তুত করে যেয়ে দেখি racket tail স্বয়ং হাজির। আর এই দুপুর বেলা হল তার খাওয়ার সময়। আর সে পতঙ্গভুক। কিন্তু তাকে পোকা বা প্রজাপতি ধরতে দেখছি না। সে করছে কি, ছোট ফটিকজল বা অন্য কালো ফিঙের মুখ থেকে খাবার ছিনিয়ে খাচ্ছে। তুলনামূলক সহজ তাই ফটিকজলের শিকারকৃত পতঙ্গই এরা ছিনিয়ে খাচ্ছে।
ছবি-রবিন রাজ
প্রাই ৩ ঘন্টা সময় কাটিয়ে ফিরলাম কিছু ভালো স্মৃতি নিয়ে। দেশটা আমাদেরই আর এসব পাখি আমাদের পরিবেশের সৌন্দর্য বজায় রাখে, তাই আমাদের সকলের উচিত এদের রক্ষা করা।
লিখেছেন- রবিন রাজ