দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রতিনিয়ত মানুষ বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। অনেক দুর্ঘটনায় শরীরের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু সঠিক উপায়ে বিচ্ছিন্ন অংশটুকু বহন না করায় তা শরীরের সাথে জোড়া লাগানো সম্ভব হয় না। আজ আমরা শিখবো কিভাবে এই বিচ্ছিন্ন অংশ বহন করতে হয়।
অনেক সময়ই দেখা যায় রোড এক্সিডেন্ট, মেশিনে বা ধারালো কিছুর আঘাতে আমাদের হাত বা পায়ের আঙ্গুল বা পুরো হাতটাই কেটে পড়ে যায়। ক্লিনিক বা হসপিটালে নিয়ে আসার পর কাটা জায়গা সেলাই করা সম্ভব হলেও শরীরের হারানো অংশ আর ফিরে পাওয়া যায় না। একটি গাছের মাথা ভেঙ্গে দিলে তা আবার গজাতে পারে। কিন্তু কোন প্রাণির শরীরের ক্ষেত্রে এটা সম্ভব নয়। তবে কাটা অংশের কোষ বা টিস্যু বেঁচে থাকলেই সেটা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। অনেকে কাটা আঙুল বা বিচ্ছিন্ন অংশ সাথে করে নিয়ে আসেন জোড়া লাগিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু সঠিক উপায় অবলম্বন না করে নিয়ে আসায় সেটা নষ্ট হয়ে যায়। তাহলে চলুন শিখে নিই শরীরের বিচ্ছিন্ন অংশ কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসতে হবে। খুবই সহজ পদ্ধতি
প্রথমে পার্শ্ববর্তী কোন ওষুধের দোকান থেকে একটা জোড়া গ্লাভস, একটা নরমাল স্যালাইন এর বোতল আর কিছু গজ ব্যান্ডেজ কিনুন। দুইটা পলিথিন জোগাড় করুন আর কিছু আইস বা বরফ। প্রথমে গ্লাভস পড়ে নিয়ে নরমাল স্যালাইনের প্লাস্টিকের বোতল কেটে শরীরের বিচ্ছিন্ন অংশটুকু ভাল করে ধুয়ে নিন। তারপর গজ ব্যান্ডেজ সেই স্যালাইন পানিতে ভিজিয়ে কাটা অংশটা গজ ব্যান্ডেজ দিয়ে জড়িয়ে নিন। তারপর একে পলিথিনের প্যাকেটে ঢুকান। এবার অন্য একটা পলিথিনে পানি নিয়ে তার ভিতর বরফ টুকরো গুলো দিন। বরফ সহ পানি ভর্তি প্যাকেটে এবার শরীরের বিচ্ছিন্ন অংশ যে পলিথিনে রেখেছেন সেই পলিথিনটি ঢুকান। আপনার কাজ শেষ। এখন আপনি নিশ্চিন্তে এটা বহন করতে পারবেন।
মনে রাখবেন ডাইরেক্ট বরফ সহ পানির ভিতর কাটা অংশ দিবেন না। আমাদের প্রয়োজন ঠান্ডা পানির সংস্পর্শ, বরফের নয়। যদি এতকিছুর ব্যবস্থা না করতে পারেন অন্তত কাটা অংশটুকু ভালো পানি বা বাজারের মিনারেল ওয়াটার দিয়ে ধুয়ে তা একটা ভেজা কাপড় এর টুকরা দিয়ে জড়িয়ে নিন। এবার ঠান্ডা পানির প্যাকেট দিয়ে একে জড়িয়ে নিয়ে চলে আসুন। এইভাবে একটা কাটা আঙুল ১২ ঘণ্টা আর কাটা হাত ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। আর দেশের যে কোন ভালো সেন্টারে এই সময়ের ভিতর যাওয়া যায়।
তবে নিয়ে গেলেই যে ডাক্তার আপনার কাটা অংশটুকু জোড়া লাগাতে পারবেন তা কিন্তু নয়। প্রথমে সেই সেন্টারে অর্থোপেডিক মাইক্রোসার্জারী বা প্লাস্টিক সার্জারি এর ব্যবস্থা থাকতে হবে। এখন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ বা স্পেশালাইজড হসপিটালে এইসব ব্যবস্থা আছে।
শুধু ব্যবস্থা থাকলেই হবে না। আপনার কাটা অংশটুকু জোড়া লাগানোর উপযুক্ত কিনা সেটা বড় ফ্যাক্টর। বেশিরভাগ সময়ই কাটা অংশটা এমনভাবে থেঁতলে যায় বা কেটে যায় যে সেটা পুনরায় ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। তাই ডাক্তারের সিদ্ধান্তই এখানে চূড়ান্ত।
আপনার তো শেখা হয়ে গেল। এখন আপনার বন্ধু বা অন্যদের এই পদ্ধতিটি জানাতে শেয়ার করুন।