দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হত্যা, নিপীড়ন ও মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
এর মধ্যদিয়ে মিয়ানমান সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বাস্তুচ্যুতের ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পথ দীর্ঘদিন পর উন্মোচিত হলো।
গতকাল (মঙ্গলবার) আইসিসির প্রসিকিউটর ফতু বেনসৌদা জানিয়েছেন, রাখাইনে সেনা নিপীড়নের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে নামার মতো পরিস্থিতি বর্তমানে সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করবে।
ওই তদন্তে রোহিঙ্গাদের হত্যা, যৌন নিপীড়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিতাড়িত করার বিষয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করার কথা জানিয়েছেন এই প্রসিকিউটর।
আইসিসির এই উদ্যোগের কারণে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পথ এবার উন্মোচিত হলো। কয়েক দিন পূর্বেই রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্তে নামার জন্য রায় দেয় আইসিসি।
যদিও মিয়ানমার দাবি করেছে, আইসিসির সদস্য না হওয়ায় তাদের নিয়ে বিচারের কোনো রকম এখতিয়ার আইসিসির নেই। কিছু দিন পূর্বে জাতিসংঘ প্রকাশিত প্রতিবেদনও প্রত্যাখ্যান করে দেশটি, যেখানে বলা হয়েছিলো যে, মিয়ানমার সেনা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগতভাবে নিধন চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ আগস্ট কয়েকটি পুলিশ চেকপোস্টে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা হামলা চালালে এর পরের দিন থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে।
সেনাদের নিপীড়ন হতে প্রাণে বাঁচতে ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন সময় সহিংসতার শিকার আরও অন্তত ৪ লাখ রোহিঙ্গা তার আগেই বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থান করে আসছিলো।
বিবিসির খবরে বলা হয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলো উদ্বাস্তু-শরনার্থদের দরজা বন্ধ করে দিলেও বাংলাদেশ নিপীড়ন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব মানবতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।