দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের বাইরে গেলে হোটেলে রুম বুক করতে হয়। শুধু রুম বুক করার আগে ছোট্টো একটি পরামর্শ মনে রাখতে হবে। যাই করুন না কেনো হোটেলের একতলা ও চারতলায় কখনও ঘর বুক করতে যাবেন না। কারণটা জানলে আপনি নিজেই উপকৃত হবেন।
বেড়াতে যাওয়ার পূর্বে আজকাল পর্যটকরা হোটেল কিংবা গেস্ট হাউস আগে থেকেই বুক করে নেন। বাইরে গিয়ে আমরা সবসময়ই চেষ্টা করি যাতে উপরের তলার কোনও ভালো ঘর পাওয়া যায়। আসলে উপরের বারান্দা কিংবা জানালা দিয়ে সেই স্থানের সেরা দৃশ্যগুলোও চোখে পড়ে। আবার অনেকেই রয়েছেন যারা হোটেলের উপরের তলায় থাকতে চান না। তারা সিঁড়ি না ভেঙে একতলাতেই থাকা পছন্দ করেন বেশি। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, হোটেলের প্রথম তলা ও চতুর্থ তলায় ঘর নেওয়া উচিত নয়। কেনো এমন পরামর্শ? আসলে এর পিছনেও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কারণ। চলুন তাহলে সেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি আজ জেনে নিই।
অভিজ্ঞ পর্যটকদের বক্তব্য
অনেক পর্যটক রয়েছেন যারা বহু দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। যে কারণে বহু হোটেলে থেকেছেন তারা। তারা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হোটেলের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। অভিজ্ঞতার কারণে ভ্রমণ সংক্রান্ত বিষয়ে রীতিমতো বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন তারা। এমনই একজন বিশেষজ্ঞ হলেন লয়েড ফিগিন্স, যিনি তার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গেই শেয়ার করেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী, হোটেলের চতুর্থ তলার উপর ও নীচতলায় কখনও রুম নেওয়া উচিত নয়।
চতুর্থ তলার উপরে রুম বুক করবেন না
লয়েড ফিগিন্সের মতে, হোটেলে রুম বুক করার পূর্বে দেখে নিন সেটি যাতে চতুর্থ তলার উপরে রয়েছে কিনা। ভালো করে খোঁজ নিতে হবে। এর পিছনে দু’টি কারণও নাকি রয়েছে। লয়েডের দাবি হলো, তার অভিজ্ঞতা বলছে যে, বেশিরভাগ হোটেলেই চার তলার উপরে নিরাপত্তার বিষয়ে নাকি গাফিলতি থাকে। বিশেষ করে গাফিতলি থাকে অগ্নি সুরক্ষার ক্ষেত্রেও।
আগুন লাগলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা
ওই বিশেষজ্ঞ বলেছেন, চতুর্থ তলায় রুম বুক করার পর সেখানে হঠাৎ আগুন লেগে গেলে আটকে পড়ার ভয়ও থাকে। কেও সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলেও তখন বিপদে পড়তে হয়। তাই নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবেই দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় তলায় রুম নেওয়াই ভালো।
নীচতলায় থাকে চুরির আশঙ্কা
অপরদিকে নীচতলার রুমের বিষয়ে মতামতও দিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ। লয়েড ফিগিন্সের ভাষায়, এমনিতেই হোটেলগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালোই থাকে। তবে তারপরেও হোটেল থেকে চুরি যাওয়ার ঘটনাও মাঝে-মধ্যে ঘটে। কোনও কারণে অতিথিকে হোটেলের রেস্তোরাঁ, রিসেপশন কিংবা মিটিং এরিয়ায় একাধিকবার দেখা গেলে কিংবা কেও যদি অনুমান করেন যে কোনও বোর্ডার বেশ ধনী, তখনই নাকি কিছু অসাধু লোক তার খোঁজ খবর নিতে থাকে। সেই ব্যক্তি কোন তলায় থাকেন তা নিয়ে খোঁজও নেয়। নীচ তলায় তার ঘর হলে চুরি করতে বেশ সুবিধা হয়।
দ্বিতীয়-তৃতীয় তলা বেশি নিরাপদ
যেহেতু নীচতলায় কোনও ঘরে লুকিয়ে থাকা খুবই সহজ, সে কারণেই বেশিরভাগ অসাধু লোক এই জাতীয় ঘরগুলোকে লক্ষ্যতে পরিণত করে। এর উপরের ঘরগুলোতে চুরি করা বেশ কঠিন ও চুরি করার সময় ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে বেশি। তাই নীচতলায় রুমগুলো এড়িয়ে দ্বিতীয়-তৃতীয় তলায় ঘর ভাড়া নিন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org