দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সকালে উঠেই আমরা চায়ের কাপে চুমুক দেয়। কিন্তু সকালে উঠে ঈষদুষ্ণ এক গ্লাস গরম পানিতে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া কতোটা উপকার তা কি আপনি জানেন?
মাত্র এক টুকরোপাতিলেবু। আপেল ও আঙুরের চেয়েও নাকি পটাশিয়াম বেশি। ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম- কী নেই এতে? সকালে উঠে ঈষদুষ্ণ এক গ্লাস গরম পানিতে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার টোটকাটা যতোটা প্রাচীন, ততোটাই কাজের ও উপকারী।
কীভাবে শরীরের যত্ন নেয় এই লেবুপানি?
হজমক্ষমতা বাড়বে
বর্তমানে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে বসে কাজ করেন। যে কারণে অনেকের মাঝে-মধ্যেই হজমের সমস্যা হচ্ছে। প্রতিদিন একটু করে লেবুর পানি খেলে অনেকটাই কাজে লাগতে পারে। টানা কয়েক দিন খালি পেটে লেবুর পানি খাওয়া অভ্যাস গড়ে তুলুন। ঝরঝরে হবে আপনার শরীর।
ওজন কমবে দ্রুত
শরীরচর্চার সময় অনেকের হয়ই না। যে কারণে বর্তমানে অন্য পথ নিতে হবে। লেবুর পানিতে যে ওজন কমে, সে কথা মনে রাখতে হবে। এক কাপ গরম পানিতে একটি পাতিলেবুর রস মিশিয়ে নিন। নিয়মিত এটি খেলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে আপনার ওজন।
ত্বকের জেল্লা বাড়বে
ভিটামিন সি থাকে লেবুতে। এটি সাহায্য করে ত্বকের যত্ন নিতে। যে কারণে নিয়মিত লেবুর পানি খেলে যেমন বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা কমে যায়, ঠিক তেমটি উজ্জ্বল দেখাবে আপনার ত্বক।
প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শরীরে প্রবিষ্ট অনেক ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়াকে ধ্বংস করতে পারে লেবুতে থাকা এই ভিটামিন সি। ফুড পয়জ়নিং বা ডায়েরিয়া প্রতিরোধেও তাই পাতিলেবুর রস কাজে দেবে। লেবু শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে, তাই সংক্রমণ ঠেকাতে প্রতিদিন নিয়ম করে লেবুপানি খেতে পারেন।
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ার কারণে পাতিলেবুর রস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। উচ্চ রক্তচাপযুক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে লেবুতে উপস্থিত ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম ভালো কাজে দেয়। এতে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও কমে যায়।
তাই প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই চায়ের কাপে চুমুক না দিয়ে লেবুপানিতে দিন শুরু করেন তাতে আপনারই উপকার হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org