দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই মনে করেন সকালে হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে সকালে হাঁটতে যাওয়ার অভ্যাসের হাত ধরেই কিছু শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
কাজের চাপে সারা দিন ব্যস্ত থাকার কারণে শরীরচর্চার সুযোগ থাকে না। তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই হাঁটতে যাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। ফিট থাকতে সকালে হাঁটাহাঁটির কোনও বিকল্পও নেই। সকালের মুক্ত হাওয়ায় হাঁটলে শুধু শরীরই নয়, ভালো থাকে মনও। তবে সব কিছুর ভালো দিক যেমন রয়েছে, আবার তেমন খারাপ দিকও রয়েছে। সকালে হাঁটতে যাওয়া অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর অভ্যাস এটি ঠিক। আবার এই অভ্যাসের হাত ধরে কিছু শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তবে কয়েকটি বিষয় যদি মাথায় রাখেন, তাহলে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হবে।
# ইদানীং বায়ুদূষণের পরিমাণ অত্যধিক হারে বেড়েছে। সকালের দিকে বাতাসে ধুলিকণা, দূষিত পদার্থ খুব বেশি ভেসে বেড়ায়। নি:শ্বাসের সঙ্গে সেগুলো শরীরে প্রবেশ করে ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকিও তাই বাড়িয়ে তোলে। তবে ঝুঁকি এড়াতে হলে মাস্ক পরে হাঁটতে পারেন।
# বর্তমানে বর্ষা সময় হওয়ায় গরম কমার কোনই লক্ষণ নেই। সকালের দিকে বেশি হাঁটাচলা, দৌড়ঝাঁপ করলে ডিহাইড্রেশনও হয়ে যেতে পারে। সেখান থেকেই অন্য কোনও বিপদও আসতে পারে। তাই সকালে হাঁটতে গেলে অবশ্যই সঙ্গে পানির বোতল রাখুন। অতিরিক্ত ঘাম হলে মাঝেমাঝে পানি খেতে পারেন।
# সকালের দিকে মশা, মাছির উপদ্রবও অনেক সময় বেড়ে যায়। বিশেষ করে বর্ষায় পোকামাক়ড় থেকে সাবধান থাকাটা জরুরি। তাই সকালে হাঁটতে গেলে হাত-পা ঢাকা পোশাক পরে বের হওয়া ভালো। এছাড়াও, এখন ডেঙ্গুর মৌসুম। এডিস মশা যাতে না কামড়াতে পারে, তার জন্যও ঢাকা পোশাক পরুন।
# ঘুম থেকে উঠেই সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতে চলে যাবেন না। কারণ হলো, ঘুম থেকে ওঠার পর ধাতস্থ হতে কিছুটা সময় লাগে। তাছাড়া ঘুমও সহজে কাটতে চায় না। সেই সময় শরীরও হাঁটা-চলার জন্যও তৈরি থাকে না। ঘুম থেকে উঠে আগে একটু হালকা ব্যায়াম করে নিতে পারেন। এরপর হাঁটতে যেতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org