দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ১৮ জনকে প্রায় দিতে হলো। গতকাল মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) এই ঘটনা ঘটেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হামাস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে, মঙ্গলবার বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা হয় গাজার উত্তরাঞ্চলে একেবারে ভূমধ্যসাগর তীরের কাছে। এই সময় ত্রাণের বস্তা মাথায় পড়ে নিহত হয়েছেন ১২ জন। আর ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছেন আরও ৬ জন।
এইসব তথ্য জানিয়ে এক বিবৃতিতে হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, দয়া করে বিমান থেকে ত্রাণের বস্তা ফেলা বন্ধ করুন। এর পরিবর্তে সড়ক পথে ত্রাণ পাঠানোর ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেসব দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’
প্রায় ২২ লাখ মানুষ অধ্যুষিত গাজা উপত্যকার এক তৃতীয়াংশ মানুষই জাতিসংঘ এবং অন্যান্য দাতা দেশ ও গোষ্ঠীগুলোর ত্রাণের ওপরেই সরাসরি নির্ভরশীল। উপত্যকায় অভিযান শুরুর সময় থেকে সেখানে ত্রাণ সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী, যে কারণে খাদ্যের অভাবে গত ফেব্রুয়ারি থেকে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয় গাজায়।
এমন এক পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারি থেকে আকাশ পথে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহের ঘোষণা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্ব।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org