দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আলসার শব্দের অর্থই হলো ‘ক্ষত’। পেপটিক আলসার হলে পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে সেই ক্ষতও হতে পারে। এই ক্ষতগুলো থেকেই পরবর্তীকালে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
এক সময় অফিসের সামনে রোল, মোমো, চাউমিন দেখলেই আর লোভ সামলাতে পারতেন না। তবে এখন সেইসব সুস্বাদু খাবারের সামনে দিয়ে গেলেও আপনার অরুচি আসে! কিছু খেলেই যেনো পেটে জ্বালা শুরু করে। খাবারে অরুচি আসা ভালো লক্ষণ নয়। এই উপসর্গই হতে পারে পেপটিক আলসারের প্রাথমিক লক্ষণ। আলসার শব্দের অর্থই ‘ক্ষত’। পেপটিক আলসার হলে পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে সেই ক্ষতও হতে পারে। এই ক্ষতগুলো থেকেই পরবর্তীকালে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
খাদ্যনালিতে অধিক মাত্রায় অ্যাসিড উৎপন্ন হলে এই রোগটি হয়। এ ছাড়াও ‘এইচ পাইলোরি’ নামক একটি ব্যাক্টেরিয়ার কারণে সংক্রমণ থেকেও এই রোগটি বাসা বাঁধে শরীরে। এই সংক্রমণের ফলে ক্ষুদ্রান্ত্রের ভিতরে আলসারও দেখা দিতে পারে। আলসার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে শুরু থেকেই। জেনে নিন কোন কোন লক্ষণ দেখলে সময় অপচয় না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
# দীর্ঘদিন ধরে পেটের উপরের এবং মাঝের দিকে জ্বালা করলে, কামড়ে ধরা ব্যথা অনুভব হলে সতর্ক হতে হবে।
# গ্যাসট্রিক আলসার হলে রোগীর খাবার খাওয়ার ২-৩ ঘণ্টা পর পেটের ব্যথা আরও বাড়ে। খাবার খাওয়ার পর যদি এমনটি প্রায়ই ঘটে, তাহলে তা আলসারের লক্ষণও হতে পারে।
# খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পেটে ব্যথা বাড়লেই সতর্ক হতে হবে। অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে পেটে অসহ্য যন্ত্রণাও হয়।
# বুকজ্বালা করলে আমরা অনেক ক্ষেত্রে অম্বলের সমস্যা ভেবেও এড়িয়ে যাই। ঘন ঘন এমনটি হওয়া আলসারের লক্ষণও হতে পারে।
# সারাক্ষণ গা গোলানো, বমি-বমি ভাবের সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই আলসার হয়েছে কি-না, সেটি পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org