দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত ৭ জুলাই ফেনীর ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী এবং পরশুরাম উপজেলায় একযোগে পালিত হয়েছে এক ‘বৃক্ষরোপণ মহোত্সব’। সেখানে সবুজায়নের অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়।
দৃশ্যটি দেখার মতো। সারিবদ্ধ হয়ে মঞ্চের দিকে তাকিয়ে হাজারও অমলিন মুখ। সবার হাতেই একটি করে গাছ, তবে সবার মনোযোগ বক্তার দিকে। যখনই বলা হলো যে, গাছের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে; সবাই একযোগে জোরালো কণ্ঠে বলে উঠলো ‘থ্যাঙ্কিউ গাছ’। পরিবেশের অকৃত্রিম বন্ধু গাছের প্রতিও যে এভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা সম্ভব, এমন নজির খুবই কম দেখা যায় সমাজে। যারা এই অনন্য মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন, তাদের কেও প্রাইমারিতে পড়েন, কেওবা হয়তো হাই স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর অপেক্ষাতে আছেন।
ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিন উপজেলা ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী এবং পরশুরামের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে একযোগে গাছ লাগানো হয়েছে ফলজ, বনজ এবং ভেষজ গাছ। সবার নিজ আঙিনার গাছ লাগানোর পাশাপাশি নানা জায়গায় আয়োজিত হয় বেশ কিছু অনুষ্ঠান। এদিন সবচেয়ে জমকালো আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয় ফেনীর ছাগলনাইয়ার চাঁদগাজী হাই স্কুল মাঠে; যার আয়োজক সমাজকর্মী এবং উদ্যোক্তা আহমেদ মাহি রাসেল।
সকাল ১০টার দিকে একে একে চাঁদগাজী স্কুল মাঠে সমবেত হতে থাকে মহামায়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ভেন্যুতে প্রবেশের সময় সবার হাতেই তুলে দেওয়া হয় তাদের পছন্দমতো একটি করে গাছ। বিতরণ করা চারার মধ্যে ছিল পেয়ারা, মেহগনি, নিম, গামারি, কড়ইসহ বিভিন্ন ধরনের ফলজ, বনজ এবং ভেষজ গাছ। সেইসঙ্গে দেওয়া হয় একটি করে ‘বৃক্ষরোপণ গাইড’, কোথায় কী গাছ লাগানো উচিত ও রোপণের সঠিক পদ্ধতি যথাযথভাবে বর্ণনা করা হয়েছে এই গাইডে।
অনুষ্ঠানের প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থীর মাঝে গাছের চারা এবং ‘বৃক্ষরোপণ গাইড’ বিতরণ করা হয়। অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা ওই অনুষ্ঠান এলাকাবাসীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org