দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক শতাব্দী পর হদিস পাওয়া গেলো জুতোসমেত পায়ের অংশ! এভারেস্টের বরফ গলে সেই পা এবং জুতোটি বেরিয়ে আসায় তা দৃষ্টি আকর্ষণ করে ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিকের তথ্যচিত্র নির্মাতাদলের।
এভারেস্টের উত্তর দিকের নীচে রোংবুক হিমবাহে অভিযান চালানোর সময় একটি জুতো খুঁজে পেয়েছেন চিত্রগ্রাহক তথা পরিচালক জিমি চিন। তারসঙ্গে ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পর্বতারোহী এরিখ রোপেকে এবং মার্ক ফিশার। জুতোটি দেখার পর তারা ভালো করে পরীক্ষা করে এর সঙ্গে কাটা পা’ও দেখতে পান। তারা তখন বুঝতে পারেন এটি ১০০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া পর্বতারোহী অ্যান্ড্রু কমিন আরভিনের। যিনি স্যান্ডি নামে বেশি পরিচিত। কারণ হলো জুতোর সঙ্গে যে মোজাটি পাওয়া গেছে তাতে আরভিনের নাম লাল সুতো দিয়ে সেলাই করে লেখা ছিল। তা দেখেই তথ্যচিত্র নির্মাতাদলটি অনুমান করেন জুতো এবং পা আরভিনের দেহেরই অংশ। ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক চ্যানেলের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্যটির বর্ণনা করা হয়।
জানা যায়, ১০০ বছর আগে বিখ্যাত পর্বতারোহী জর্জ ম্যালরির সঙ্গে আরভিন এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে অদৃশ্য হন। এক শতক পূর্বে অর্থাৎ ৮ জুন, ১৯২৪-এর সকালে, অ্যান্ড্রু কমিন আরভিন ও জর্জ ম্যালরি এভারেস্ট অভিযানের জন্য যাত্রা শুরু করেছিলেন। আরভিন যখন এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার জন্য যাত্রা করেন তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ২২ বছর। এরপর তাদের কোনও খোঁজই পাওয়া যায়নি। ১৯৯৯ সালে ম্যালরির দেহাবশেষ পাওয়া গেলেও আরভিনের হদিস তখনও পাওয়া যায়নি। আরভিনের জুতো এবং দেহের অংশ আবিষ্কার হওয়ার পর এক শতাব্দী পূর্বে এভারেস্ট চূড়ায় যা ঘটেছিল সেই রহস্যের সমাধান হতে পারে বলেও মনে করছেন পর্বতারোহীরা। যদি এই জুটি এভারেস্ট চূড়ায় উঠেছিলেন বলে শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়, তবে এডমন্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগের রেকর্ডটি তাহলে ভেঙে যাবে। কারণ এডমন্ড এবং তেনজিং জুটিই ১৯৫৩ সালে প্রথম এভারেস্টের চূড়ায় পা রাখেন বলে মনে করা হতো। তবে এখন অনেকেই ধারণা করছেন যে, এডমন্ড ও তেনজিং এভারেস্টে পৌঁছানোর ২৯ বছর পূর্বেই হয়তো অ্যান্ড্রু কমিন স্যানডে আরভিন প্রথম আরোহী হিসাবে সফল হন। আরভিনের পরিবারের সদস্যরা দেহাবশেষের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের প্রস্তাবও দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু হয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org