দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কিছু নিয়ম মেনে যোগাসন করলেই পাওয়া যাবে ফল। শরীর চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন করতে পারেন, আজ রয়েছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত।
প্রতিদিনের নানা অনিয়মের কারণে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লম্বা হচ্ছে প্রেসক্রিপশনের ওষুধের তালিকা। অনেকেই অল্প বয়সে নানা রকম রোগে ভুগছেন জীবনশৈলীতে বিভিন্ন অনিয়মের কারণেও। ফিট থাকতে নিয়ম করে শরীরচর্চা করাটা জরুরি। এই একটি দাওয়াইতেই গায়েব হতে পারে হাজার ধরনের রোগ। তবে কাজের ব্যস্ততা এবং সংসারের দায়িত্ব সামলে জিমে যাওয়ার সময়ই পান না অনেকেই। ইচ্ছে থাকলে বাড়িতেই আধা ঘণ্টা সময় বের করে যোগাসন কিংবা ব্যায়াম অভ্যাস করতে পারেন। কেবলমাত্র রোগা হতেই নয়, নানা রকম রোগ-বালাই ঠেকিয়ে রাখতেও নিয়ম করে যোগাসন করা একান্ত দরকার। তবে সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই পাওয়া যাবে ফল। শরীর চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন আপনি অভ্যাস করতে পারেন, সেটি আজ জেনে নিন।
কাঠুররা যেভাবে কাঠ কাটেন, সেই ভঙ্গিতেই এই আসনটি করা হয়। অনেকেই বলেন, কাঠুররা কাঠ কাটার সময় তাদের জমে থাকা রাগ, দুঃখ, ভয় এবং অবদমিত ইচ্ছে উজাড় করে দেন। প্রতিদিনের আসন অভ্যাসে এই গতিশীল অনুশীলন প্রত্যাহ জীবনে শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
কীভাবে করবেন?
# প্রথমে ম্যাটের ওপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। দুই পায়ের মধ্যে কিছুটা ফাঁক রাখুন।
# এবার মনে মনে ভাবুন, আপনি দুই হাত দিয়ে একটি ভারি কুঠার শক্ত করে ধরে রয়েছেন। এটিই হলো আসন শুরুর ভঙ্গি।
# ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে দুই হাতে ভারি কুঠারটি ধরে তোলার ভঙ্গি করুন। ধীরে ধীরে মাথার উপর দিয়ে পিছনের দিকে কাল্পনিক কুঠারটি তুলতে হবে। এবার মেরুদণ্ড সামান্য পিছনে হেলান।
# এবারে শ্বাস ছেড়ে মুখ দিয়ে ‘হা’ শব্দ করে পায়ের মাঝখান বরাবর রাখা কাল্পনিক ভারি কাঠ কাটার ভঙ্গিতে দ্রুত নামাতে থাকুন মুঠো করা হাত।
# হাঁটু সামান্য পরিমাণ ভাঁজ হবে। তবে লক্ষ রাখবেন যে, পা যেনো মাটি থেকে উপরে উঠে না যায়। এভাবে এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হলো।
# আবারও শুরুর ভঙ্গিতে গিয়ে দুই হাত উপরে তুলে কাঠ কাটার ভঙ্গি করতে হবে। এইভাবে ৫–৭ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে আপনাকে।
# প্রতি বারই দ্রুত শ্বাস ছাড়তে হবে ও মুখ দিয়ে জোরে ‘হা’ শব্দ করতে হবে। যে কারণে মানসিক চাপও দূর হবে।
সতর্কতা
অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখ এবং শিরদাঁড়ার সমস্যা থাকলে এই আসনটি অভ্যাস করবেন না।
কেনো করবেন?
নিয়মিত কাষ্ঠ তক্ষণাসন অভ্যাস করলে শ্রোণি, কোমর এবং নিতম্বের পেশিতে রক্ত চলাচল আরও বাড়ে। যে কারণে এই অংশের পেশি উজ্জীবিত হয় এবং থাকে টান টান। এই আসনটির আরও একটি বিশেষ কার্যকারিতাও রয়েছে। কাঁধ এবং পিঠের উপরের দিকের পেশি সচরাচর খুব বেশি ব্যবহার না হওয়ার কারণে সেখানে আড়ষ্ট ভাব আসে। আর তখন ব্যথা বাড়ে। এই আসনটি অভ্যাস করলে কাঁধ এবং পিঠের উপরের দিকের পেশির সঞ্চালনও হয়। সেইসঙ্গে, শ্বাস ছাড়ার সময় মুখ দিয়ে ‘হা’ শব্দ করার নানা ভালো দিকও রয়েছে। যে কারণে মনের মধ্যে জমে থাকা রাগ, দুঃখ, ভয় দূর হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org