দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রণ সারবে হলুদ ও গোলমরিচের পানিতে! নেটমাধ্যমে এমন দাবির যৌক্তিকতা আসলে কতোটা? এতে কী আদৌ ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরবে? সত্যিই কী এমনটি হতে পারে?

মুখে ব্রণ, রুক্ষ ত্বক- সমাধান হেঁশেলের উপকরণেই রয়েছে। নেটমাধ্যমে চোখ রাখলে ত্বকের হাজারও সমস্যার এমন সহজ সমাধান পাওয়া যাচ্ছে। কেও বলছেন ডিটক্স পানীয়ে লুকিয়ে রয়েছে ঝলমলে ত্বকের রহস্য, কেও আবার বলছেন স্বাস্থ্যকর শট খাওয়ার। অনেকেই বলছেন যে, হলুদ পানির সঙ্গে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলেই সেরে যাবে ব্রণ, আরও উজ্জ্বল হবে ত্বক। বাস্তবে কী এমন উপকার পাওয়া যাবে?
ভারতের গুরগাঁওয়ের ত্বকের চিকিৎসক মিক্কি সিং বলেছেন, ‘‘হলুদ মিশ্রিত পানীয় ও গোলমরিচের পানি খেলেই মুখের ব্রণ সেরে যাবে, এ কথার কোনও বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তিই নেই।’’ কারণ হলুদে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। গোলমরিচ হলুদের পুষ্টিগুণ শোষণেও সহায়ক। তবে এই পানি খেলে ব্রণের সমস্যার সমাধান হবে, এমনটি মানতে নারাজ তিনি।
লিভার বা পেটের সমস্যা, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে ব্রণ হয়। তাছাড়াও ত্বকের ধরণ তৈলাক্ত হলে, ত্বকে থাকা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ছিদ্রের মুখ বন্ধ হলেই ধুলো, ময়লা জমার ফলেও অনেক সময় ব্রণও হতে পারে। মিক্কির ভাষায়, হরমোন, অতিরিক্ত তৈলক্ষরণ কিংবা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের মতো বিষয়গুলো থাকে ব্রণ হওয়ার নেপথ্যে। তার চিকিৎসায় প্রয়োজন হয় রেটিনয়েডস, বেঞ্জোল পারক্সাইড, স্যালিসিলিক অ্যাসিড ও ক্ষেত্র বিশেষে খাওয়ার ওষুধও। তা ছাড়াও চিকিৎসার অন্যান্য ধরনও রয়েছে। যে কারণে শুধুমাত্র কোনও পানীয় খেলে ফল পাওয়া যাবে, তা মোটেও মনে করছেন না তিনি।
আর হলুদে রয়েছে কারকিউমিন। এই উপাদানটি অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়াও এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদানও। আবার গোলমরিচেরও নানা রকম উপকারিতা রয়েছে। এতেও থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট- প্রদাহনাশক উপাদান।
ভারতের মুম্বইয়ের ত্বকের চিকিৎসক শরিফা চসের বক্তব্য হলো, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকলেও এই পানীয় ব্রণ সারানোর জন্যও ভালো, তা কিন্তু বলা যায় না। বরং ঘন ঘন এমন পানি খেলে ত্বকে সমস্যাও হতে পারে। তিনি বলেছেন, এই দুই উপাদান সরাসরি মুখে মাখা ঠিক নয়। বিশেষত ব্রণ থাকলে এই ধরনের টোটকায় সমস্যাও বাড়তে পারে।
চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন যে, ত্বকের সমস্যায় এর-ওর কথা শুনে এটা-সেটা মাখা মোটেও ঠিক নয়। ব্রণ কিংবা ত্বকে সংক্রমণ ঘটলে সরাসরি চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org