দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৃত্যুর মুহূর্তে মানুষ কী দেখতে পায়? যদি কাওকে প্রশ্ন করা হয় তাহলে জবাব পাওয়া বেশ দুষ্কর ব্যাপার। কারণ যিনি মৃত্যুবরণ করেন তিনি তো আর পরে কিছু বলতে পারেন না। তবে তার আশেপাশে যারা থাকেন তারা অনেক কিছুই টের পান। এমনই এক নার্সের বয়ানে উঠে এসেছে বিষয়টি।
আসলে মানুষের যখন মৃত্যুঘটে তখন কী হয় মৃত্যুর পূর্বমুহূর্তে? কেমন হয় মৃত্যুপথযাত্রীদের অনুভূতি? আদৌ তাদের সামনে স্বর্গ-নরকের কোনো দৃশ্য কী সত্যিই ভেসে ওঠে? এমন নানা প্রশ্ন রয়েছে মানুষের মনে। এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি কোনোদিন। তবু মানুষ বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে, কারণ হলো অনিবার্য বিষয় মৃত্যু নিয়ে মানুষের রয়েছে অদম্য কৌতূহল।
সংবাদ মাধ্যমের এক খবরে বলা হয়েছে, নিকি মরগান নামের একজন সেবিকা (নার্স) সম্প্রতি মৃত্যুর আগমুহূর্তে মানুষ আসলে কী বলে বা কী করে, সে সম্পর্কে নিজের সারা জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। এই সেবিকা নিকি মরগান দীর্ঘদিন ব্রিটেনের রয়্যাল স্টোক বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। পেশাগত কারণে মৃত্যুর আগমুহূর্তে মানুষের অভিব্যক্তি কিংবা বাক্যালাপ তিনি নিজের চোখে দেখেছেন। সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই তিনি দাবি করে বলেছেন, অনেক রোগীই নাকি মৃত্যুর আগমুহূর্তে স্বর্গ কিংবা নরকের দৃশ্য দেখতে পান! অবশ্য তার এই বক্তব্যকে একেবারে মিথ্যা বলা যাবে না। কারণ হলো ইসলামের বিভিন্ন হাদিস হতেও এমন প্রমাণ পাওয়া যায়। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে ভালো কাজ করেন সে মৃত্যুর সময় স্বর্গ দেখতেই পারে। আর যে খারাপ কাজ করে অর্থাৎ যিনি পাপিষ্ট তিনি নরকের দৃশ্য দেখতে পারেন, সেটিই স্বাভাবিক।
নিকি তার বক্তব্যের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর পূর্বে মৃত্যুর আগমুহূর্তে এক ব্যক্তি প্রায় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন। সে সময় তিনি বলেন যে, মরতে তার একটুও ভ্য় লাগছে না। কারণ হলো চোখের সামনে তিনি স্বর্গ দেখতে পাচ্ছেন।’ তার পেশাজীবনে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে বলে জানান নিকি মরগান।
আবার মৃত্যুর আগে অনেকেই টের পান, তার জীবন শেষ হয়ে আসছে। কেও আবার মৃত্যুর আগাম খবর অনেক আগেই পেয়ে যান। কেও কেও পান কয়েক মাস বা কয়েক ঘণ্টা পূর্বে।
নিকি মরগান বলেন, এক রোগী মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে জানান, কিছুদিন পরেই জীবনের ৮০তম বছরে পা দেবেন। বলেন, ‘আমি জন্মদিনের উৎসব করবো। তারপরই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাববো।’ বাস্তবেও ঘটেছিল ঠিক তাই।
নিকি মরগান জানান, মৃত্যুর পূর্বে অনেক রোগী তার প্রিয় খাবার খেতে চান। দেখা করতে চান পরিবারের প্রিয় মানুষের সঙ্গেও। অনেকেই আবার শেষ সময় কাটাতে চান তার পোষা প্রাণীদের সঙ্গে।
সেবিকা নিকি মরগান এমন এক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক বৃদ্ধ দম্পতির ঘটনা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে এক রোগী তার বৃদ্ধ স্ত্রীকে পাশে চেয়েছিলেন। আবদার মেটাতে বিছানার পাশে তার স্ত্রীকে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়। তখন ওই দম্পতি হাত ধরে একসঙ্গে গান গাইতেন। এর ঠিক ১০ দিনের মধ্যেই স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই মৃত্যু ঘটে। এভাবে সেবিকা নিকি মরগান অনেকগুলো বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। যা সত্যিই ঘটেও থাকে মানব জীবনে।