দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পরী নিয়ে অনেক কথায় আমরা যুগে যুগে শুনেছি। কেও বিশ্বাস করে আবার কেও বলে পরী বলে কিছু নেই। তবে পৃথিবীতে পরী আছে এমন কথা বিশ্বাস করে একটি দেশের অর্ধেক মানুষ!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, প্রায় ৬০ মিলিয়ন বছর ধরে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে আইসল্যান্ড দ্বীপটির উৎপত্তি হলেও এখানে ভাইকিং অভিযানকারীরা বসতি স্থাপন করতে শুরু করে আজ নয় সেই এক হাজার বছর পূর্বে।
আইসল্যান্ডের অধিবাসীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি ইউরোপের মূলধারার সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তারা নিজেদের ঐতিহ্য, রীতিনীতি এবং ভাষা এখনও ঠিক সেভাবেই ধরে রেখেছে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, গ্রামীণ আইসল্যান্ডীয় অধিবাসীরা প্রাচীন নরওয়েজীয় পূরাণের নানা দৈত্য-দানব বা পরি, ট্রোল ইত্যাদির অস্তিত্বকে পূর্ণভাবে বিশ্বাস করে।
আইসল্যান্ডের শতকরা ৫৪ ভাগ মানুষই মনে করেন যে, সত্যিই পৃথিবীতে এলভস বা যাকে বলে পরীর অস্তিত্ব রয়েছে। আবার কেও কেও নাকি দেখতেও পারে বিশেষ এইসব পরীদের! তাদের বর্ণনায় জানা যায়, এইসব পরীরা উচ্চতায় মোটামুটি তিন ফুটের মতো। পরীর কান দুটি নাকি বেশ বড়সড়। তাদের পরনে থাকে নাকি বেশ প্রাচীনকালের ফ্যাশনের কাপড়-চোপড়। তবে এই পরীরা ‘পয়েন্টি হ্যাট’ পরে না বলেও বেশ জোরালো বক্তব্য দিয়ে থাকেন তারা!
তবে এই পরীদের অস্তিত্বের বিষয়টি দেশের সব স্থানে এক রকম নয়। এই পরীদের নিয়ে সব থেকে বেশি কল্পকাহিনী রচিত হয় হাফনার ফজরোয়ার নগর নামক স্থানে। রাজধানী রেইকিয়াভিক হতে সামান্য দূরের এই নগরকে পরীদের রাজধানী বলেও আখ্যায়িত করে থাকেন অনেকেই। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ বিশ্বাস করেন তাদের আশেপাশেই রয়েছে পরী। এইসব পরীরা নাকি নানা সময় ত্রাতা হিসেবে তাদের রক্ষা করে বিপদ-আপদে।
শুধু তাই নয়, আইসল্যান্ডীয় শিশুরাও বিশ্বাস করে বড়দিনের তের দিন পূর্ব হতে ১৩ জন ইউলে ল্যাডস বিশেষ এক ধরনের ‘দেবদূত’ নাকি আসে তাদের কাছে। ১৩ দিনে ১৩ জন ভিন্ন ভিন্ন ইউরে ল্যাড আসে। যারা শিশুদের সারা বছরের কাজকর্মের ওপর ভিত্তি করে তাদের জন্য উপহার বা শাস্তি নিয়ে আসে। মূলত এটিকে বড়দিনের এক ভিন্ন সংস্করণ বলা যায় আইসল্যান্ডের এই ইউলে ল্যাডস সংস্কৃতিতে। শিশুরা বিশ্বাস করে, এই ‘দেবদূতরা’ নির্দিষ্ট একটা দিনে এসে আবার নির্দিষ্ট একটা দিনে ফিরেও যায়। আর যারা ভালো তাদের কাছে ভালো দেবদূতরা আসে নানা ধরনের উপহার নিয়ে!
পরীর অস্তিত্বে তারা এতোটাই বিশ্বাস করে, রাস্তার কোন স্থানে পরী রয়েছে মনে হলে রাস্তার গতিপথই তখন পাল্টে দেওয়া হয়। দেশটির একজন সংসদ সদস্য পরীর অস্তিত্ব সম্পর্কে বলেছেন যে, একবার একটি পরীর পরিবারই নাকি গাড়ি দুর্ঘটনা হতে তার জীবন বাঁচিয়েছিল! এভাবে পরীদের অস্তিত্ব্য সম্পর্কে তারা নানা তথ্য দিয়ে থাকে। তারা পুরোপুরিভাবে বিশ্বাস করে পরী রয়েছে।